মোহাম্মদ আসাদ আলিঃ
বর্তমানে ইসলামের সাথে সন্ত্রাসকে একীভূত করে ফেলা হোয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাস এবং জেহাদ দু’টি দুই মেরুতে অবস্থান করে। যার আদর্শকে বুকে ধারণ করে দেশেরপত্র তার গন্তব্যে এগিয়ে চলছে অর্থাৎ যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী সুস্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন যে জেহাদ, কেতাল এবং সন্ত্রাস এক জিনিস নয়। জেহাদ হোচ্ছে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ও প্রচেষ্টা, অস্ত্র নিয়ে নেমে যাওয়া নয়। বই লিখে, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে, বক্তৃতা কোরে, বুঝিয়ে অর্থাৎ যে যেভাবে পারেন সত্যটা অন্যের কাছে তুলে ধরবেন, এটাই হোল জেহাদ।
কেতাল হোচ্ছে সশস্ত্র যুদ্ধ, অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ। এটা ব্যক্তির কাজ নয়। রাষ্ট্রের ব্যাপার। রাষ্ট্রে সেনাবাহিনী থাকতে পারে, পুলিশ থাকতে পারে, তাদের কাছে অস্ত্র থাকবে। রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে তারা সেই অস্ত্র ব্যবহারও কোরবে, এটা বৈধ। কিন্তু ব্যক্তি অস্ত্র ব্যবহার কোরতে পারে না।
আল্লাহর রসুল (সাঃ) মক্কায় থাকতে অস্ত্র হাতে নেন নাই। মক্কায় রসুল (সাঃ) একজন নাগরিক ছিলেন। তাই অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও অস্ত্র ধরেন নাই। রসুল (সাঃ) যদি একবার বোলতেন, কে আছ আবু জেহেলের জবান চিরতরে বন্ধ কোরে দিতে পার? কোন সাহাবী কি বসে থাকতেন? রসুল (সাঃ) বোলতে যতক্ষণ, সাহাবীরা আবু জেহেলের গর্দান ফেলে দিতেন। কিন্তু রসুল (সাঃ) সেটা বলেন নি। এমনকি একবার এক মহিলা সাহাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে হত্যা করার উদ্দেশ্যে। ওমর (রাঃ) রসুলের (সাঃ) কাছে মহিলা সাহাবাকে উদ্ধার কোরে আনার জন্য অনুমতি প্রার্থনা কোরলেন। রসুল (সাঃ) উদ্ধার করার অনুমতি দিলেন না। অর্থাৎ মক্কী জীবনে রসুল (সাঃ) অস্ত্রের সংস্পর্শে গেলেন না।
মদীনার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাসুলকে (সা:) তাদের নেতা হিসেবে মেনে নিল। এরপর রাসুল (সা:) রাষ্ট্রপ্রধান হোলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্যান্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধানের মতই যা যা করণীয় তা কোরলেন। রাষ্ট্রের পক্ষ হোয়ে সন্ধি, সনদ করা প্রয়োজন হোয়ে পড়েছে, অনেক যুদ্ধ কোরেছেন অর্থাৎ কেতাল কোরেছেন। রাষ্ট্রের জন্য যেটা বৈধ।
মক্কায় যেহেতু রসুল (সাঃ) অস্ত্র হাতে নেন নাই সেহেতু কোন ব্যক্তি বা সংগঠন অস্ত্র হাতে নিতে পারে না। যদি নেয় তবে সেটা সন্ত্রাস, কেতাল নয়। ব্যক্তি বা সংগঠন অস্ত্র হাতে নিলে সেটাই হবে সন্ত্রাস। রসুলের (সাঃ) অনুসারীদের মধ্যে কেউ এটি কোরতে পারে না। যারা করে তারা রসুলের সুন্নাহ বা আদর্শ থেকে সরে গেল। রসুলের (সাঃ) শিক্ষা পালন কোরলো না। রসুলের (সাঃ) শিক্ষার বিপরীতমুখী সন্ত্রাসী কাজ কোরে কেউ রসুলের (সাঃ) অনুসারী থাকতে পারে না। এমামুযযামানের দেওয়া জেহাদ, কেতাল ও সন্ত্রাসের সংজ্ঞা যদি আজ মানবজাতি আত্মস্থ কোরতে পারে তবে ধর্মের নামে সন্ত্রাসের অস্তিত্ব পৃথিবীতে থাকবে না। কোন মোসলেমকে ঐ সমস্ত ধর্ম ব্যবসায়ীরা সন্ত্রাসী বানাতে পারবে না।