রসুলাল্লাহর নারী আসহাব রুফায়দাহ (রা.) এর স্মরণে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত একটি নার্সিং কলেজ। পৃথিবীজুড়ে তাঁর নামে এমন আরো অনেক নার্সিং কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে।
ইসলামের ইতিহাসে প্রথম পেশাদার নার্স হলেন রুফাইদাহ আল-আসলামিয়া। তিনি মদিনার বনি আসলাম গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং ইসলাম গ্রহণকারী মদিনার প্রথম সাহাবীদের একজন ছিলেন। রুফাইদাহর (রা.) পিতা ছিলেন একজন চিকিৎসক যাকে তিনি নিয়মিত সহায়তা করতেন এবং এভাবেই তিনি পিতার কাছ থেকে চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন।
রসুলাল্লাহ (সা.) প্রথম দিককার যুদ্ধাভিযানগুলোতে প্রেরিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে একদল চিকিৎসক ও নার্সকেও অন্তর্ভুক্ত করতেন যারা আহতদের চিকিৎসা দিতেন, যত্ন নিতেন, শহীদদেরকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরিয়ে নিতেন।
রুবাইয়া বিনতে মুয়ায়েজ (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমরা রসুলাল্লাহর (সা.) সঙ্গে জেহাদে অংশগ্রহণ করতাম। লোকদেরকে পানি পান করাতাম, তাদের আবশ্যকীয় জিনিসগুলো সরবরাহ করতাম, আহতদের ঔষধপত্রের ব্যবস্থা করতাম এবং নিহতদের লাশ ও আহতগণকে মদিনায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতাম (বোখারি, হাদিস নং ১৩২৯)।
মদিনায় আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে রসুলাল্লাহ (সা.) রুফায়দাহকে (রা.) যুদ্ধাহত ও অন্যান্য অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য এবং আরও বেশি মুসলিম নারীদেরকে নার্স হিসাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য মসজিদের আঙিনায় একটি তাঁবু স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিলেন। ওহুদ যুদ্ধে আহত বিশিষ্ট সাহাবী সাদ বিন মা’আজ (রা.) তিন মাস তাঁর তাঁবুতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ইতিহাসের গ্রন্থগুলোতে রুফাইদাহকে (রা.) একজন আদর্শ নার্সের গুণাবলীর অধিকারী মহিলা হিসাবে, সহানুভূতিশীল, একজন ভাল নেতা এবং একজন দুর্দান্ত শিক্ষক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি জাতির জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করেছেন, সুবিধাবঞ্চিতদের (অনাথ এবং প্রতিবন্ধীদের) সাহায্য করেছেন। তিনি রোগ প্রতিরোধমূলক যত্নের পক্ষে ছিলেন বলে জানা যায়।