হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

কোন পথে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান একজাতি হতে পারে

রিয়াদুল হাসান:
বিভিন্ন ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে হেযবুত তওহীদ প্রায়ই মতবিনিময় সভা করে থাকে। সেখানে একটি প্রশ্ন বারবার উঠে আসে যে, সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে অভিন্ন জাতিসত্তা গড়ে তোলা আদৌ সম্ভব কিনা। এ প্রশ্নের আলোকে বলতে চাই, এটা শতভাগ সম্ভব, শুধু একটি ইচ্ছা থাকতে হবে যে আমরা সবাই সকলের স্রষ্টা এক আল্লাহর হুকুম মানবো। এই অঙ্গীকার যদি সবাই করতে পারে তবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া মুহূর্তের মধ্যেই সম্ভব। এ সত্য অনস্বীকার্য যে, পাশ্চাত্য সভ্যতার দর্শন গ্রহণ করার কারণে পৃথিবীতে অধিকাংশ এখন মানুষ চায়-ই না যে সমগ্র মানবজাতি এক জাতি হোক। তারা বৈচিত্র্য (Diversity) চায়, নিজেদের জন্য তারকাঁটা ঘেরা একটা স্বাধীন দেশ চায়। আর যারা একজাতি চায় তারা অধিকাংশই বিশ্বাস করে না যে এটা আদৌ সম্ভব।

ধর্মবিদ্বেষীদের বড় একটি অভিযোগ হচ্ছে, ধর্ম মানুষকে বিভক্ত করে। এই ইতিহাস অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, অতীতে ধর্ম নিয়ে মারামারি করে পৃথিবীতে বিপুল পরিমাণ রক্তপাত ঘটানো হয়েছে। এই ধর্মহীন বিশ্বব্যবস্থার যুগেও চলছে হান্টিংটনের ‘সভ্যতার সংঘাত’। ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান ঘটানো হচ্ছে ও সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে হত্যা করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ নির্দোষ মানুষ, ধ্বংস করা হচ্ছে একটির পর একটি দেশ।

পাশ্চাত্য সভ্যতার ধারকরা মুখে যত উদারতার কথাই বলুন না কেন, সাম্প্রদায়িকতা তাদের মনে-মগজে মিশে আছে। তাদের এই বিদ্বেষের শিকার হচ্ছে মুসলিমরা। ইরাক আক্রমণের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ প্রেস ব্রিফিং-এ এই যুদ্ধকে ‘ক্রুসেড’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। মধ্যযুগে জেরুজালেমের দখল নিয়ে খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে প্রায় দুশো বছর ধরে (১০৯৯-১২৯১) রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলেছিল যার নাম ক্রুসেড। এতে শেষ পর্যন্ত খ্রিষ্টানদের পরাজয় ঘটে, তারা পবিত্রভূমির নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়। আবার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯১৭ সালে উসমানী খেলাফতের হাত থেকে জেরুজালেম শহরটি দখল করে নেয় ব্রিটিশ বাহিনী।

পাঁচশ বছর আগে পাশ্চাত্যে জন্ম নেওয়া ধর্মহীন বস্তুবাদী সভ্যতার বিশ্বময় আধিপত্য নিরংকুশ হয়েছে কয়েক শতাব্দী থেকে। এই আধিপত্য অর্জনের জন্য তারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সৃষ্টিকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগিয়েছে। সেই রাজনীতির প্রভাবে ইসলামবিদ্বেষ এখন সর্বব্যাপী। ধর্মীয় পরিচয়কে গণ্য না করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পশ্চিমা সভ্যতা। তথাপি গণতন্ত্রের স্বর্গ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মুসলিমবিরোধী নীতি নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। তিনি রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে পর্যায়ক্রমে ১৩টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।
এভাবেই সাম্প্রদায়িক রেষারেষি ও লড়াই মানুষের সাথে মানুষের বিভেদ তৈরি করে রেখেছে সেই প্রাচীন যুগ থেকে আজকের দিন পর্যন্ত। আমাদের ভারত উপমহাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানদের মধ্যেও পারস্পরিক সম্প্রীতি সৌহার্দ্যরে চেয়ে অবিশ্বাস, ঘৃণা, অনাস্থাই বেশি ক্রিয়াশীল। গত এক শতাব্দীতে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার এই দেশগুলোতে কেবল হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, বৌদ্ধ-মুসলিম দাঙ্গায় লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে, গৃহহীন হয়ে দেশছাড়া হয়েছে। হিন্দু-মুসলিম দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগ পর্যন্ত হয়েছে।

ধর্মের ভিত্তিতে এই যে বিভক্তি এটার জন্য কে দায়ী? যিনি ধর্ম পাঠিয়েছেন এটা কি তাঁরই অভিপ্রায়? নাকি মানুষ স্রষ্টার বিরুদ্ধ শক্তি ইবলিসের প্ররোচনায় স্বার্থপরবশ হয়ে স্রষ্টার হুকুম অমান্য করে এই বিভক্তির জন্ম দিয়েছে?

আমরা যদি ধর্মগ্রন্থগুলো পাঠ করি তাহলে দেখব স্রষ্টা বা ঈশ্বর (Supreme being) একজন। তিনি চূড়ান্ত ন্যায়ের প্রতীক। তাঁর হুকুম-বিধান ন্যায়সঙ্গত। সকল ধর্মে কাজ দুই প্রকার- সৎকর্ম-অসৎ কর্ম। সে হিসাবে মানুষও সব ধর্মে দুই প্রকার- পুণ্যবান ও পাপী। যারা আল্লাহর (ঈশ্বর, ভগবান, গড যে নামেই ডাকি) অনুগত তারা পুণ্যবান, যারা আল্লাহর অবাধ্য তারা পাপী। জন্মের ভিত্তিতে বর্ণবাদ প্রথা হিন্দু ধর্মে ছিল না। বেদ-উপনিষদে পাওয়া যায় এক সময় পেশার ভিত্তিতে সামাজিক শ্রেণি-বিভাজন ছিল। মানুষ পেশা পরিবর্তন করলে তার বর্ণও পরিবর্তিত হত।

একইভাবে ইসলাম ধর্মেও মানুষ দুই প্রকার- মো’মেন ও কাফের। যারা স্রষ্টার হুকুমের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং সেই হুকুম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে তারা মোমেন। আর যারা স্রষ্টার হুকুমকে অস্বীকার করে তারা কাফের যার অর্থ সত্য প্রত্যাখ্যানকারী। আল্লাহ কোথাও বলেন নাই অন্য ধর্মের লোকদের জোর করে ধর্মান্তরিত করতে বা তাদেরকে হত্যা করতে বা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। তিনি যুদ্ধ করতে বলেছেন সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন ইসলামবিদ্বেষীরা ছড়াচ্ছে যে আল্লাহ নাকি ইহুদি, খ্রিষ্টান ইত্যাদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মুসলমানদের যুদ্ধ করতে বলেছেন। এগুলো স্রেফ অপপ্রচার, অপব্যাখ্যা। বরং কোর’আনে খ্রিস্টানদের ব্যাপারে বলা আছে- তুমি অবশ্যই মো’মেনদের জন্য মানুষের মধ্যে শত্রুতায় অধিক কঠোর পাবে ইহুদি ও মুশরিকদেরকে। আর মো’মেনদের জন্য বন্ধুত্বে তাদেরকে নিকটে পাবে যারা বলে, ‘আমরা নাসারা (খ্রিস্টান)’ (মায়েদা, ৮২)। এই আয়াতগুলো এসেছে তদানীন্তন রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে। নাজ্জাশী ছিলেন আবিসিনিয়ার খ্রিস্টান শাসক। তিনি রসুলাল্লাহকে সত্য প্রচারে সহযোগিতা করেছিলেন। আল্লাহর রসুলও তাকে আমৃত্যু সম্মান দিয়েছেন এবং মৃত্যুর পর তার গায়েবানা জানাজা পড়েছেন। মুসলিমরা সাতশো বছর ভারত শাসন করেছে। যদি মুসলিম শাসকরা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ লালন করতেন বা জোর করে ধর্মান্তর করতেন তাহলে এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকে কী করে?

একইভাবে সব ধর্মেই দুটো কালের কথা বলে- ইহকাল ও পরকাল। গন্তব্য দুটো- স্বর্গ-নরক। এমনকি বৌদ্ধ ধর্মেও এই স্বর্গ নরকের ধারণা রয়েছে, যদিও বর্তমানে প্রচলিত বৌদ্ধ ধর্ম নিরিশ্বরবাদী। অনেক গবেষক বলেছেন যে ত্রিপিটকে একেশ্বরবাদের বহু প্রমাণ রয়েছে। যাহোক, যারা স্বর্গ নরক বিশ্বাস করে তারা নিশ্চয়ই এটা বলবেন না যে, মানুষ সেই স্বর্গ নরক বানিয়েছে। আব্রাহামিক ধর্মগুলোর মৌলিক বিশ্বাসগুলো হুবহু এক। যেমন সব মানুষ এক দম্পতি থেকে আগত। তাঁর নাম ইসলামে আদম-হাওয়া, ইহুদি ও খ্রিষ্টধর্মে অ্যাডাম-ইভ। একইভাবে বৈদিক ধর্মেও আমরা পাই সয়ম্ভূ মনু-শতরূপা হলেন আদি পিতা ও মাতা। আবার মুসলিম, ইহুদি, খ্রিষ্টান সবাই ইব্রাহিম (আ.) কে জাতির পিতা বলে মান্য করে। সুতরাং মানবজাতি এক জাতি, এক পরিবার।

একইভাবে এক স্রষ্টার হুকুম তথা সার্বভৌমত্ব মেনে চলাই হচ্ছে সকল ধর্মের ভিত্তি। ইসলামে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ কলেমার অর্থ আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা বা বিধাতা নেই। এই তওহীদের দিকেই সকল নবী রসুল তাদের জাতিকে আহ্বান করেছেন। আল্লাহ পৃথিবীর সকল জনপদে তাঁর দূত পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যে এ মর্মে রাসুল পাঠিয়েছি যে তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো ও ‘তাগুত’ বর্জন করো। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক মানুষকে আল্লাহ সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং কিছুসংখ্যকের জন্য বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো, মিথ্যারোপকারীদের কী পরিণতি হয়েছিল। [সুরা নাহল ৩৬]।

যখন কোনো জনপদে তাগুত অর্থাৎ আল্লাহ ভিন্ন অন্য কোনো বিধানদাতার হুকুম কায়েম হয়েছে, তখন সেখানে অশান্তি অন্যায় অবিচার বিস্তার লাভ করেছে। সেই অন্যায় থেকে মানুষকে রক্ষা করতে আল্লাহ নতুন নবী পাঠিয়েছেন। কিছু লোক তাঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরিশুদ্ধ হয়েছে, এক আল্লাহর হুকুমের উপর ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কিছু লোক পূর্ববর্তী বিকৃত ধর্ম ও সংস্কার ধরে রেখে বিপথগামী হয়ে গেছে। এভাবে একাধিক ধর্মের সূত্রপাত হয়েছে পৃথিবীতে। নতুন নবীর আনীত শিক্ষা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে সেটাকেও তার অনুসারীরা স্বার্থপরবশ হয়ে একটা সময় পর কলুষিত করে ফেলেছে, একজনের পরিবর্তে বহুজনের হুকুম মানা শুরু করেছে। ফলে আবারও অশান্তি বিস্তার লাভ করেছে। আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক নতুন নবী পাঠিয়ে মানুষকে সেই তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। হাদিসে আছে এমন ১ লক্ষ ২৪ হাজার (মতান্তরে ২ লক্ষ ২৪ হাজার) বার্তাবাহক আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কোর’আনে কেবল ২৫ জনের নাম রয়েছে। প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি এই ভারতবর্ষেও নিশ্চয়ই অগণিত নবী-রসুল এসেছেন। সনাতন ধর্মের পরিভাষায় এই নবীদেরকেই বলা হয়েছে অবতার। তাদের কারো নাম কোর’আনে উল্লেখ না থাকলেও তাদের মূল শিক্ষা, তাদের ইতিহাস কোর’আনে বর্ণিত নবীদের সঙ্গে মিলে যায়। কালপরিক্রমায় ধর্মগুলো ভিন্ন পরিচয় ধারণ করলেও সেগুলোর মধ্যে অগণিত মিল রয়েছে। যেমন ইসলামের এক নাম দীনুল কাইয়্যেমা। শব্দটি এসেছে ‘কায়েম’ থেকে যার অর্থ শাশ্বত, সুপ্রতিষ্ঠিত, চিরন্তন, সনাতন জীবনব্যবস্থা। যে নীতি বা ধর্ম ছিল, আছে এবং থাকবে সেটাই হচ্ছে সনাতন বা কাইয়্যেমাহ। সনাতন ধর্মে তওহীদকে বলে- একেশ্বরবাদ যার মূলমন্ত্র- একমেবাদ্বীতিয়ম, একম ব্রহ্ম দ্বৈত্ব নাস্তি। যার অর্থ হচ্ছে- ব্রহ্ম একজন। তাঁর কোনো দ্বিতীয় নাই। এক অদ্বিতীয় পরব্রহ্মের আনুগত্যই হচ্ছে একত্ববাদ বা একেশ্বরবাদের মূল বক্তব্য।

একইভাবে ঈসা (আ.) ট্রিনিটি বা ত্রিত্ববাদের শিক্ষা দেননি, তিনি তওহীদের শিক্ষাই দিয়েছেন। বাইবেলে আমরা পাই, একদিন একজন লোক তাঁর কাছে জানতে চাইলো, সকল অনুশাসনের মধ্যে সর্বপ্রথম অনুশাসন কি? ঈসা (আ.) উত্তরে বললেন, “শোন হে বনি ইসরাইল- সর্বপ্রথম অনুশাসন হচ্ছে আমাদের প্রভু আল্লাহ হচ্ছেন একমাত্র প্রভু “The first of all the commandments is, Hear, O Israel; The Lord our God is one Lord.” (The 12th chapter of Mark) অন্যত্র তিনি বলেন, There is only one Lawgiver and Judge. (Nwe Testament: James 4:12). বিধানদাতা ও বিচারকর্তা কেবল একজনই। বাইবেল বলছে, যিশু খ্রিস্ট আবার আসবেন এবং এন্টি ক্রাইস্ট ধ্বংস করবেন, শেষনবীর হাদিসেও বলা আছে তিনি আবার আসবেন এবং এসে দাজ্জাল ধ্বংস করবেন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন। এই দাজ্জাল বা এন্টি ক্রাইস্টের পরিচিতিমূলক হাদিস ও বর্ণনাগুলো পড়লে এটা স্পষ্ট হবে যে, পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ইহুদি-খ্রিষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই হচ্ছে সেই মহাশক্তিশালী দানব দাজ্জাল।

পবিত্র কোর’আনে ঈসা (আ.) সম্পর্কে উল্লেখ আছে যে, গ্রন্থধারীদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তার মৃত্যুর পূর্বে তাঁর প্রতি ঈমান আনবে না (সুরা নিসা ১৫৯)। সুতরাং গ্রন্থধারী জাতি হিসাবে সনাতন, ইহুদি, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি সবাই তাঁর উপর ঈমান আনবে অর্থাৎ এরা সবাই আদর্শ বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে এক জাতিতে পরিণত হবে।

আমার লেখার উদ্দেশ্য তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব আলোচনা নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে- এই সকল ধর্মের অনুসারীদের সামনে একটি মহাসত্য তুলে ধরা। আর তা হল- আমরা সবাই এক জাতি। আমাদের ধর্মগুলো একই স্রষ্টার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো বিধান। আমাদের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও শত্রুতা তা অনর্থক। একই গাছের দুটো শাখা কখনও একে অপরের শত্রু হতে পারে না। তাই আমাদের উচিত ধর্মীয় শত্রুতা ভুলে ভাই-ভাই হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আমাদের মধ্যে কেবল একটি বিভাজন থাকতে পারে- ন্যায় ও অন্যায়ের বিভাজন। আমরা আল্লাহকে ন্যায়ের সূত্র হিসাবে গ্রহণ করব। সব ধর্মেই চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার, ধর্ষণ, জুলুম, শোষণ নিষিদ্ধ। আমরা এসব সুস্পষ্ট অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হব। সমগ্র বিশ্বে আজকে যে অন্যায়, অবিচার, যুদ্ধ, রক্তপাত তার মূলে রয়েছে স্রষ্টাহীন, আত্মাহীন জড়বাদী সভ্যতা। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সভ্যতাকে প্রত্যাখ্যান করব এবং স্রষ্টার হুকুমভিত্তিক একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য সর্বান্তকরণে চেষ্টা ও সংগ্রাম করব।

[লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক, যোগাযোগ: ০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৭১১৫৭১৫৮১]

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...