হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

আশুলিয়ায় ঐক্যবদ্ধ ভাইবোনদের নিয়ে আলোচনা সভা


ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ধর্মবিশ্বাসের অপপ্রয়োগ রোধে করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সাভার ও আশুলিয়া এলাকার হেযবুত তওহীদের সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা ও এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এছাড়াও এ সময় স্থানীয় সুধীজন ও ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম তার বক্তব্যে বলেন, কোনো বস্তু, প্রাণী বা শক্তি যে বৈশিষ্ট্য বা গুণ ধারণ করে সেটাই হচ্ছে তার ধর্ম। আগুনের ধর্ম পোড়ানো। পোড়ানোর ক্ষমতা হারালে সে তার ধর্ম হারালো। অথচ প্রচলিত ধারণা হচ্ছে যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট লেবাস ধারণ করে সুরা-কালাম, শাস্ত্র মুখস্থ বলতে পারে, নামাজ-রোজা, প্রার্থনা করে সে-ই ধার্মিক। এটা সঠিক ধারণা নয়। মানুষের প্রকৃত ধর্ম আসলে কী? মানুষের ধর্ম হচ্ছে মানবতা। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অন্যের দুঃখ-কষ্ট হৃদয়ে অনুভব করে এবং সেটা দূর করার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালায় সে-ই ধার্মিক। মানবজাতির সুখ শান্তিই হচ্ছে ধর্মের আসল উদ্দেশ্য। সেই মানুষই যদি কষ্টে থাকে তাহলে সবার সব ধর্মপরিচয় মিথ্যা। এই মানবতার ধর্ম পরিত্যাগ করে বক ধার্মিকরা মসজিদে, চার্চে, মন্দিরে, প্যাগোডায় বুঁদ হয়ে পড়ে আছে; ওদিকে দাজ্জাল, শয়তান, আসুরিক শক্তির তা-বে সমস্ত বিশ্ব ছারখার হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সমাজের দিকে যদি আমরা তাকাই তবে স্পষ্ট দেখতে পাবো যে, আমাদের সমাজের জনগণ শান্তিতে নেই এবং তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। একজন মানুষ জন্মগতভাবেই স্বাধীন এবং জন্মের পর থেকেই তার অন্যতম চাহিদা হয়ে দাঁড়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা। শুধু মানুষ নয় অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। কিন্তু সেই শান্তি ও নিরাপত্তা যখন একটি সমাজে থাকে না তখন সেই সমাজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তখন সেই সমাজকে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। একটি সমাজ একক কোনো ব্যক্তি দ্বারা তৈরি হয় না তাই সমাজ পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তও একক কোনো ব্যক্তির একার পক্ষে নেয়া সম্ভব নয়। সে কারণে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া।
মানব জাতির বর্তমান অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বস্তুগত সভ্যতায় বাস করতে করতে আমরা এমন এক পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছি যেখানে আমরা আদর্শগত বিষয়গুলো, নীতি-নৈতিকতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, মানবতা ইত্যাদিকে রীতিমতো বিসর্জন দিয়ে ফেলেছি। আমাদের কাছে আরামে থাকা ও শান্তিতে থাকা একই বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু একজন কোটিপতি ব্যক্তি আরামে থাকলেও সে শান্তিতে রয়েছে এ কথা কেউ বলতে পারবে না। এমনকি সে নিজেও স্বীকার করবে যে, সে শান্তিতে নেই। আদর্শের অভাবে আমাদের মধ্যে আত্মিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে যার দরুণ আমরা ব্যক্তি জীবনে যেমন অশান্তিতে রয়েছি তেমনি সামাজিক জীবনেও চলছে অশান্তি ও নিরাপত্তাহীনতা।
হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেন, অতএব আমাদের আদর্শ লাগবেই এবং যদি আদর্শ গ্রহণই করতে হয় তবে প্রকৃত ইসলামের আদর্শ থেকে উত্তম আদর্শ নেই। কারণ সেই আদর্শ দ্বারা একবার অর্ধ পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অতএব এখন সমাজের সকলকে এ বিষয়ে ভাবতে হবে এবং গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। আমাদের তৈরি তন্ত্র-মন্ত্রগুলো যখন আমাদের শান্তি প্রদান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে তখন স্রষ্টার ব্যবস্থা নিয়ে দেখতে অসুবিধা কোথায়? সিদ্ধান্ত পুরোটাই আপনাদের হাতে।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...