বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে ‘সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে শিল্পী সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমীর পরিচালক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু। পরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাত পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম।
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট) এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। প্রধান আলোচক বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের চেয়ারম্যান হোসাইন মোহম্মদ সেলিম। বিশেষ আলোচক ছিলেন কবি ও ছড়াকার আসলাম সানী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন রুখতে দেশীয় সংস্কৃতির ব্যাপক চর্চা, ধর্মান্ধদের দ্বারা সংস্কৃতি বাধাগ্রস্থ করার বিরুদ্ধে সংস্কৃতি প্রেমীদের ভ‚মিকা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে একটি ভিন্নধারার সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে বহু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হেযবুত তওহীদ। এতে অংশ নিয়েছেন দেশের বহু বরেণ্য শিল্পী, সাহিত্যিক, গীতিকার, সুরকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বলেন, হেযবুত তওহীদ সুস্থ ধারার শিল্প ও সংস্কৃতির পক্ষে কথা বলার কারণে সংগঠনের সদস্যদের উপর বিভিন্ন জায়গায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। একটি ধর্মান্ধ উগ্র গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদকে নাস্তিক, খ্রিস্টান ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে এসব হামলা ঘটিয়ে এসেছে। ইসলামে সংস্কৃতি চর্চার যে স্বাধীনতা রয়েছে তাকে এই গোষ্ঠীটি গলা টিপে হত্যা করতে চায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসময় তিনি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক বিপ্লব গড়ে তোলার আহŸান জানান। অন্যথায় এক সময় সংস্কৃতি কর্মী ও শিল্পীদের ঘরে ঘরে হামলার ঘটনা ঘটবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ, শৃঙ্খলা, আনুগত্য, অসুস্থ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ সহ ছয় দফা রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদের সহ-সভাপতি চিত্রনায়িকা নুতন, দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, বাসাপ এর ইউএসএ সভাপতি মৃদুল রহমান, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এএসএম নজীবুল আকবর, বাসাপের উপদেষ্টা, বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ইউনুস আলী মোল্লা।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন মঞ্জুর হোসেন ঈশা, শিমুল পারভীন ও জেসমিন বন্যা। অনুষ্ঠান শেষে মাটি মিউজিকের উদ্যোগে একটি মঞ্চ নাটক পরিবেশিত হয়। নাটকটি পরিচালনা করেন লেখক ও নাট্যকার ওবায়দুল হক বাদল।