হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

হেযবুত তওহীদের সংক্ষিপ্ত কিছু বক্তব্য

মসীহ উর রহমান, আমীর, হেযবুত তওহীদ:
মানবজাতির বর্তমান সঙ্কট থেকে মুক্তির একমাত্র পথ স্রষ্টার বিধান। মুসলিম বলে পরিচিত এই জনসংখ্যাটিসহ সমস্ত মানবজাতি আজ তার সমষ্টিগত জীবন মানুষের তৈরি জীবনব্যবস্থা দিয়ে পরিচালনা করছে। ফলে সমস্ত পৃথিবীতে কোথাও শান্তি নেই, মানুষের জীবন সংঘর্ষ, রক্তপাত, অন্যায়, অবিচারে পূর্ণ হয়ে আছে। মানুষের তৈরি এই বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্র এ সমস্যাগুলোর সমাধান করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে নি বরং দিন দিন পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। হেযবুত তওহীদের বক্তব্য এই যে, শান্তি, ন্যায়, সুবিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ বর্তমান জীবনব্যবস্থা (System) বাদ দিয়ে স্রষ্টার, আল্লাহর দেওয়া জীবন ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তা সমষ্টিগত জীবনে কার্যকরী করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।  বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ইসলাম ধর্ম নামে যে ধর্মটি চালু আছে সেটা আল্লাহর প্রকৃত ইসলাম নয়। গত ১৪০০ বছর ধরে ধীরে ধীরে আল্লাহর প্রকৃত ইসলাম ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা বিকৃত ও বিপরীতমুখী হয়ে গেছে। আল্লাহ অতি দয়া করে তাঁর প্রকৃত ইসলাম যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে বুঝিয়েছেন। হেযবুত তওহীদ সেই প্রকৃত ইসলামের ধারক। ধর্ম এসেছে মানবতার কল্যাণে। ধর্মের কোন বিনিময় চলে না। বিনিময় নিয়ে ধর্ম বিকৃত হয়ে যায়। কাজেই ধর্মের কাজ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে করতে হবে এবং বিনিময় নিতে হবে কেবল আল্লাহর কাছ থেকে। সহজ সরল সেরাতুল মোস্তাকীম দীনুল হক, ইসলামকে পণ্ডিত, আলেম, ফকীহ, মোফাস্সেরগণ সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বহু মতের সৃষ্টি করেছে। ফলে একদা অখণ্ড উম্মতে মোহাম্মদী হাজারো ফেরকা, মাজহাব, দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে আছে। ভারসাম্যহীন সুফিরা জাতির সংগ্রামী চরিত্রকে উল্টিয়ে ঘরমুখী, অন্তর্মুখী করে নিস্তেজ, নিপ্রাণ করে দিয়েছে। ফলে একদা অর্ধ্ব-বিশ্বজয়ী দুর্বার গতিশীল যোদ্ধা জাতিটি আজ হাজার হাজার আধ্যাত্মিক তরিকায় বিভক্ত, স্থবির উপাসনাকেন্দ্রিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। এই উভয় শ্রেণির কাজের ফলে ইসলামের উদ্দেশ্যই পাল্টে গেছে। সংগ্রাম করে সারা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার বদলে ধর্মের উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে আত্মার উন্নয়ন এবং জীবনের ব্যক্তিগত অঙ্গনের ছোট খাটো বিষয়ের মাসলা মাসায়েল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করা। ব্রিটিশরা এই জাতিকে পদানত করার পর এরা যেন কোনদিন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে এজন্য একটি শয়তানি ফন্দি আঁটে। তারা এ জাতির মানুষের মন ও মগজকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য দু’টি সমান্তরাল শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলন করে, যথা: মাদ্রাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা। তাদের অধিকৃত সকল উপনিবেশেই তারা মুসলমানদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার নাম করে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে এবং সেখানে তারা নিজেদের মনগড়া একটি বিকৃত-বিপরীতমুখী ইসলাম শিক্ষা দেয়। মাদ্রাসাগুলির অধ্যক্ষপদ তারা নিজেদের হাতে রেখে দীর্ঘ ১৪৬ বছর এই উপমহাদেশের মুসলমানদেরকে তাদের তৈরি ‘ইসলাম’ শিক্ষা দিয়েছে। এখানে অংক, ভূগোল, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা ইত্যাদির কোন কিছুই রাখা হলো না, যেন মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে এসে আলেমদের রুজি-রোজগার করে খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য এই দীন, ধর্ম বিক্রি করে রোজগার করা ছাড়া আর কোন পথ না থাকে। খ্রিষ্টানরা এটা এই উদ্দেশ্যে করল যে তাদের মাদ্রাসায় শিক্ষিত এই মানুষগুলো যাতে বাধ্য হয় দীন বিক্রী করে উপার্জন করতে এবং তাদের ওয়াজ নসিহতের মাধ্যমে বিকৃত ইসলামটা এই জনগোষ্ঠীর মন-মগজে স্থায়িভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়; এ উপমহাদেশসহ খ্রিষ্টানরা তাদের অধিকৃত সমস্ত মুসলিম দেশগুলিতে এই একই নীতি কার্যকরী করেছে এবং সর্বত্র তারা একশ’ ভাগ সফল হয়েছে।  ধর্মনিরপেক্ষ সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থাটি তারা চালু করল স্কুল কলেজের মাধ্যমে। এ ভাগটা তারা করল এই জন্য যে, এ বিরাট এলাকা শাসন করতে যে জনশক্ত
ি প্রয়োজন তা এদেশের মানুষ ছাড়া সম্ভব ছিল না; সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের কেরাণীর কাজে অংশ নিতে যে শিক্ষা প্রয়োজন তা দেওয়ার জন্য তারা এতে ইংরেজি ভাষা, সুদভিত্তিক অংক, বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক, ইতিহাস (প্রধানতঃ ইংল্যান্ড ও ইউরোপের রাজা-রাণীদের ইতিহাস), ভূগোল, প্রযুক্তিবিদ্যা অর্থাৎ পার্থিব জীবনে যা যা প্রয়োজন হয় তা শেখানোর বন্দোবস্ত রাখলো; সেখানে আল্লাহ, রসুল, আখেরাত ও দীন সম্বন্ধে প্রায় কিছুই রাখা হলো না, সেই সঙ্গে নৈতিকতা, মানবতা, আদর্শ, দেশপ্রেম ইত্যাদি শিক্ষাও সম্পূর্ণ বাদ রাখা হলো। তাদেরকে এমনভাবে শিক্ষা দেওয়া হলো যাতে তাদের মন শাসকদের প্রতি হীনম্মন্যতায় আপ্লুত থাকে এবং পাশাপাশি তাদের মন-মগজে, আল্লাহ, রসুল, দীন সম্বন্ধে অপরিসীম অজ্ঞতাপ্রসূত বিদ্বেষ (A hostile attitude) সৃষ্টি হয়। বিশ্ব-রাজনৈতিক কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের খ্রিষ্টান শক্তিগুলি তাদের উপনিবেশগুলিকে বাহ্যিক স্বাধীনতা দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা ক্ষমতা দিয়ে যায় এই সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রেণিটির উপর যারা চরিত্রে ও আত্মায় ব্রিটিশদের দাস। ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া সেই শিক্ষাব্যবস্থা আজও চালু আছে। এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, ব্রিটিশ শাসক গোষ্ঠী নামে খ্রিষ্টান হলেও তারা প্রকৃতপক্ষে ঈসা (আ.) এর অনুসারী ছিল না। ঈসা (আ.) এর শিক্ষাকে বহু পূর্বেই তারা বাদ দিয়ে ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে। আল্লাহর শেষ রসুল আখেরি যামানায় যে এক চক্ষুবিশিষ্ট দানব দাজ্জালের আবির্ভাবের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, যাকে ঈসা (আ.) Anti-christ বলে আখ্যায়িত করেছেন, মাননীয় এমামুয্যামান সেই দাজ্জালকে হাদিস, বাইবেল, বিজ্ঞান ও ইতিহাসের আলোকে সন্দেহাতীতভাবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, পাশ্চাত্য ধর্মনিরপেক্ষ বস্তুবাদী সভ্যতাই হচ্ছে সেই দাজ্জাল। বর্তমানে সমগ্র মানবজাতি সেই দাজ্জালের তৈরি জীবনবিধান মেনে নিয়ে তার পায়ে সেজদায় পড়ে আছে। পরিণামে তারা একদিকে যান্ত্রিক প্রগতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করলেও মানুষ হিসাবে তারা পশুর পর্যায়ে নেমে গেছে। সমগ্র মানবজাতি ঘোর অশান্তি, অন্যায়, অবিচারের মধ্যে ডুবে আছে। দাজ্জালের হাত থেকে পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব ছিনিয়ে নিয়ে আল্লাহর হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই সংগ্রাম করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। আল্লাহর রসুল বলেছেন যে, যারা দাজ্জালকে প্রতিরোধ করবে তারা বদর ও ওহুদ দুই যুদ্ধের শহীদের সমান মর্যাদার অধিকারী হবে (আবু হোরায়রা রা. থেকে বোখারী মুসলিম)। হেযবুত তওহীদের যারা দাজ্জালের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে তাদেরকেও আল্লাহ দুই শহীদ হিসাবে কবুল করে নিয়েছেন। যার প্রমাণস্বরূপ তিনি একটি বিরাট মো’জেজা হেযবুত তওহীদকে দান করেছেন। তা হলো: এই দাজ্জাল প্রতিরোধকারীরা মৃত্যুবরণ করলে তাদের দেহ শক্ত (রাইগরমর্টিস) ও শীতল হয়ে যায় না। জীবিত মানুষের ন্যায় নরম ও স্বাভাবিক থাকে।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...