হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর জেহাদ এক নয়

এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর লেখা থেকে:
হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের বক্তব্য, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এই জাতির সামনে প্রকাশ করার পর থেকে এ পর্যন্ত যে বিষয়টি লক্ষ্য করা গেল তা হচ্ছে এই যে, মুসলিম বলে পরিচিত ১৬০ কোটি জনসংখ্যার যে অংশটুকু এই দেশে আছে তাদের একাংশ হয় ভীত হয়েছেন না হয় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এই অংশটি হচ্ছে জাতির সেই অংশ যেটা কিছুতেই আল্লাহ, রসুলের দীন প্রতিষ্ঠা হোক তা চায় না। তারা মানবজীবনে আল্লাহর দেয়া জীবন-ব্যবস্থা, দীন প্রতিষ্ঠার ঘোর বিরোধী। যারাই আল্লাহর দেওয়া দীন প্রতিষ্ঠার কথা বলে, চেষ্টা করে এই শ্রেণিটি তাদের সবাইকে এক পাল্লায় ফেলে তাদের কর্ম-প্রচেষ্টাকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি বলে প্রচার করে মানুষের কাছে তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চান। ইসলামে জেহাদ, কেতালের যে আলোচনা রয়েছে সেটাকেই তারা সন্ত্রাস বলে চিহ্নিত করতে চায়। কিন্তু জেহাদ আর সন্ত্রাস এক জিনিস নয়, সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। জেহাদ শব্দের অর্থ কোনো কাজ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা; আর সন্ত্রাস হচ্ছে হিংসাত্মক কাজ করে, বোমা ফাটিয়ে, ধ্বংস করে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করা। অথচ মুসলিম নামধারী এই লোকগুলি ইসলামের পবিত্র জেহাদকে সন্ত্রাস বলে চালিয়ে, জেহাদের বিরুদ্ধে মানসিকতা গড়ে তুলতে চান। অথচ দীন প্রতিষ্ঠার এই জেহাদ অর্থাৎ প্রচেষ্টা ছাড়া দীনুল ইসলামই অসম্পূর্ণ; কারণ ঈমানের সংজ্ঞার মধ্যে, মো’মেন হবার সংজ্ঞা, শর্তের মধ্যেই আল্লাহ এই জেহাদ অর্থাৎ দীন প্রতিষ্ঠার এই প্রচেষ্টাকে, সংগ্রামকে সংযুক্ত করে দিয়েছেন। (দেখুন- সুরা হুজরাত, আয়াত ১৫)।
যারা আমাদের জীবনে আল্লাহর দেওয়া দীনুল হক, ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক তা চান না তারা স্বভাবতই এই প্রচেষ্টাকে অর্থাৎ জেহাদকেও চান না, এটাই স্বাভাবিক। তারা জেহাদ অর্থাৎ প্রচেষ্টাকে হেয়, মন্দ কাজ বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় একে সন্ত্রাসের সঙ্গে এক করে দিয়েছেন, যাতে সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসকে ঘৃণার সাথে জেহাদকেও ঘৃণা করে। যেহেতু ইসলাম বিরোধী এই লোকগুলির নিয়ন্ত্রণেই দেশের অধিকাংশ প্রচার ব্যবস্থা অর্থাৎ মিডিয়া (গবফরধ), সেহেতু তাদের অবিশ্রান্ত মিথ্যা প্রচারের ফলে তারা প্রায় সফলও হয়েছেন। মুসলিম ও মো’মেন হবার দাবিদারও আজ নিজেকে কোনোভাবে জেহাদ অর্থাৎ দীনুল ইসলাম প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত হবার কথা স্বীকার করতে ভয় পান এবং করেনও না।
সুতরাং প্রয়োজন হয়ে পড়েছে যে, দীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় জেহাদ এবং কেতালের স্থান কোথায় তা নির্দিষ্ট করা। জেহাদ শব্দের অর্থ সংগ্রাম, সর্বাত্মক সংগ্রাম, প্রচেষ্টা। জেহাদ হচ্ছে দীন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা মানুষকে বুঝিয়ে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা। এই বোঝানো হতে পারে মুখে বলে, লিখে, বক্তৃতা করে, যুক্তি উপস্থাপন করে ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে। আর কেতাল একেবারে ভিন্ন শব্দ যার অর্থ সশস্ত্র যুদ্ধ। জেহাদ ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠী ইত্যাদির পর্যায়ে এবং কেতাল রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা দল যদি দীন প্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্র হাতে নেয় তবে সেটা হবে মারাত্মক ভুল। তাদের কাজ হবে মানুষকে যুক্তি দিয়ে কোর’আন-হাদিস দেখিয়ে, বই লিখে, বক্তৃতা করে মানুষকে এ কথা বোঝানো যে পৃথিবীতে নিরংকুশ শান্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের মধ্যে বাস করতে হলে একমাত্র পথ যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর দেয়া জীবন বিধান মোতাবেক আমাদের জীবন পরিচালনা করা। সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায় যে, কোনো জিনিস কীভাবে পরিচালনা করতে হবে, কীভাবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে সেটা সবচেয়ে ভালো জানবেন ঐ জিনিসের স্রষ্টা। এজন্যই মহান আল্লাহ সুরা মুলকের ১৪ নং আয়াতে বলেছেন- যে সৃষ্টি করেছে তার চেয়ে বেশি জানো? (তুমি সৃষ্ট হয়ে?) এ যুক্তির কোনো জবাব আছে? কিন্তু আমরা মো’মেন মুসলিম হবার দাবিদার হয়েও দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদি-খ্রিষ্টান জড়বাদী ‘সভ্যতা’র নির্দেশে আল্লাহর দেয়া দীন, জীবন-ব্যবস্থা থেকে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অংশটুকু ছাড়া সমষ্টিগত (যেটা প্রধান) অংশটুকু বাদ দিয়ে সেখানে নিজেরা বিধান, আইন-কানুন, নিয়মনীতি নির্ধারণ করে সেই মোতাবেক আমাদের সমষ্টিগত জীবন পরিচালনা করছি। ফল কী হয়েছে? শিক্ষাদীক্ষায়, বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে মানব ইতিহাসের চূড়ান্ত স্থানে উপস্থিত হয়েও আজ পৃথিবী অশান্তি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার আর মানুষে মানুষে সংঘর্ষ ও রক্তপাতে অস্থির। তাহলে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে যে মানুষ তার জীবন পরিচালনার জন্য যে ব্যবস্থা তৈরি করে নিয়েছে তা তাকে শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই মানুষকেই বোঝাতে হবে যে এ পথ ত্যাগ করে মানুষের সার্বভৌমত্বকে ত্যাগ করে আল্লাহর রসুল যা শিখিয়েছেন সেই আল্লাহর সার্বভৌমত্বে ফিরে যেতে হবে, সেই সার্বভৌমত্বকে গ্রহণ করে তাঁর দেয়া দীন, জীবন-ব্যবস্থাকে গ্রহণ করে আমাদের জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই কাজ কি জোর করে করাবার কাজ? এটাতো সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায় যে জোর করে, শক্তি প্রয়োগ করে মানুষকে কোনো কিছু বিশ্বাস করানো অসম্ভব।
হেযবুত তওহীদ এই কাজটাই করার সংকল্প করেছে এবং করছে মানুষকে বুঝিয়ে, যুক্তি দিয়ে। প্রকৃত ইসলামের স্বরূপ তুলে ধরাই হচ্ছে বিকৃত ইসলামের কুফল থেকে সমাজকে রক্ষা করার একমাত্র পথ। হেযবুত তওহীদ তাই আল্লাহর সার্বভৌমত্বে (উলুহিয়াতে) মানুষকে ফিরে আসার আহ্বান করছে এবং জঙ্গিবাদের ভ্রান্তিগুলো রসুলের জীবন থেকে, কোর’আন হাদিস থেকে তুলে ধরছে। এই সত্য প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজটি করার জন্য হেযবুত তওহীদ প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে আল্লাহর রসুলের প্রক্রিয়া, অর্থাৎ তরিকাহ। তিনি কী করেছিলেন? মক্কী জীবনের তের বছর তাঁর আহ্বান অর্থাৎ বালাগ ছিল ব্যক্তি ও দলগত পর্যায়ে। তাই তিনি ও তাঁর দল সর্বপ্রকার অত্যাচার, মিথ্যা দোষারোপ, নির্যাতন সহ্য করেছেন- কোনো প্রতিঘাত করেননি। হেযবুত তওহীদের মোজাহেদরাও আজ ২৩ বছর ধরে মানুষকে তওহীদের, আল্লাহর সার্বভৌমত্বের দিকে আহ্বান জানিয়ে আসছে, এটা করতে যেয়ে তারা বিরুদ্ধবাদীদের গালাগালি খাচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে, মার খাচ্ছে প্রচণ্ডভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। দাজ্জালের অনুসারী, আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার বিরোধীদের দ্বারা হেযবুত তওহীদের মোজাহেদরা বহু স্থানে বহু বার আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের আক্রমণে বহু মোজাহেদ সাংঘাতিকভাবে জখম, আহত হয়েছেন এবং তিনজন পুরুষ মোজাহেদ এবং একজন নারী মোজাহেদা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। তাদের মিথ্যা প্রচারে ও প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে পুলিশ মোজাহেদদের গ্রেফতার করছে, তাদের শারীরিক নির্যাতন করছে, জেলে দিচ্ছে, তাদের নামে আদালতে মামলা দিচ্ছে, এমন কি একেবারে মিথ্যা মামলাও দিচ্ছে। কিন্তু এই ২৩ বছরে পাঁচ শতাধিক মামলার একটিতেও কোনো মোজাহেদ আদালতের বিচারে দোষী প্রমাণিত হয়নি, একটিতেও শাস্তি হয়নি।
হেযবুত তওহীদের জন্মের সময় থেকেই আমি নীতি হিসাবে রসুলের এই তরিকা অনুসরণ করেছি। আমার নির্দেশ দেয়া আছে কোনো মোজাহেদ কোনো রকম বে-আইনি কাজ করবে না, কোনো আইন ভঙ্গ করবে না, কোনো বে-আইনি অস্ত্র হাতে নেবে না। যদি আমি জানতে পারি যে কোনো মোজাহেদদের কাছে বে-আইনি অস্ত্র আছে তবে আমিই পুলিশে খবর দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেব। এই পরিপ্রেক্ষিতে কোনো মোজাহেদ বে-আইনি কাজ করে কোনো অস্ত্র মামলায় আদালত থেকে শাস্তি পায়নি। তবু হয়রানি, নির্যাতন অব্যাহত থেকেছে।
আল্লাহর রসুলের তের বছরের মক্কী জীবনও ছিল শুধু এক তরফা নির্যাতন। তারপর মদিনার মানুষ যখন তাঁর তওহীদের ডাক গ্রহণ করল, তখন তিনি হেজরত করে সেখানে যেয়ে রাষ্ট্র গঠন করলেন। যেই রাষ্ট্র গঠন করলেন তখনই নীতি বদলে গেল। কারণ রাষ্ট্র কোনোদিন ব্যক্তি বা দলের নীতিতে টিকে থাকতে পারে না। তিনি যখন মদিনাবাসীর অবিসংবাদিত নেতা হলেন তখন তাঁকে বিচারক হিসাবে বিবাদের মীমাংসা করতে হলো, অপরাধীদের বিচার করতে হলো, শাসক হিসাবে বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনিক দপ্তর (মসজিদ) প্রতিষ্ঠা করতে হলো, সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দিতে হলো। আল্লাহর রসুল হিসাবে তিনি তাদেরকে কোর’আন শিক্ষা দিতেন এবং তাদের আত্মিক ও শারীরিক উপযুক্ততা সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করতেন। ভূখণ্ডের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার জন্য তখন তাঁর প্রয়োজন হবে অস্ত্রের, সৈনিকের, যুদ্ধের প্রশিক্ষণের। নবগঠিত রাষ্ট্রের সেনাপ্রধান হিসাবে আল্লাহর রসুলও প্রয়োজনীয় সামরিক পদক্ষেপ নিলেন। তিনি অপরাপর রাষ্ট্রনায়কদের মতোই জাতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য যুদ্ধ করলেন, প্রয়োজনে সন্ধি করলেন। এগুলো সবই করলেন যখন তাঁর হাতে একটি জাতি তাদেরকে পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিল তারপর অর্থাৎ রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার পর। সুতরাং রসুলাল্লাহর প্রদর্শিত পথ মোতাবেক তওহীদ ভিত্তিক এই সত্যদীন প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তি গোষ্ঠী বা দলগতভাবে কোনো কেতাল অর্থাৎ সশস্ত্র যুদ্ধ নেই, আছে শুধু তওহীদের, আল্লাহর সার্বভৌমত্বের আহ্বান, বালাগ দেয়া। ঠিক তেমনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আছে সশস্ত্র যুদ্ধ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অস্ত্র, যুদ্ধ ইত্যাদি যদি আইন সম্মত না হয় তবে পৃথিবীর সব দেশের সামরিক বাহিনীই বে-আইনি, সন্ত্রাসী। কোর’আন ও হাদিসে যে জেহাদ ও কেতালের কথা আছে তা রাষ্ট্রগত। আজকে যারা ইসলামবিদ্বেষীদেরকে হত্যার ফতোয়া দিচ্ছেন আর যারা চাপাতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই হত্যাকে রসুলাল্লাহর করা সামরিক অভিযানের সঙ্গে এক করে দেখাতে চান তারা কি এই দণ্ড প্রদানের জন্য জাতি কর্তৃক মনোনীত বিচারক, নাকি গায়ে মানে না আপনি মোড়ল? বিচারক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া দূরের কথা জাতি যাদেরকে চেনেই না, তারা কোন অধিকারে, কোন ক্ষমতাবলে অপরকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করছেন? তারা কি মাদ্রাসায় কিছু মাসলা মাসায়েল শিখে মুফতি হয়ে নিজেদেরকে নিজেরাই রাষ্ট্রের ‘কাজী’ বলে সাব্যস্ত করছেন?
বলা হয়, হেযবুত তওহীদের বইগুলি জেহাদি বই, কারণ ওতে জেহাদ ও কেতালের কথা লেখা আছে। জেহাদ এবং কেতালের কথা লেখা আছে বলে যদি আমাদের বইগুলি আপত্তিকর বলে মনে করা হয় তবে তাদের এ ধারণা অসম্পূর্ণ থেকে গেল; কারণ প্রত্যেক মুসলিম দাবিদারের বাড়িতেই অন্ততঃ দুইটি বই আছে যাতে আমার বইয়ে জেহাদ ও কেতাল যতবার লেখা আছে তা থেকে বহুগুণ বেশিবার ঐ শব্দ দুটি, জেহাদ ও কেতাল লেখা আছে। শুধু লেখা আছে নয় যা করার জন্য সরাসরি আদেশ দেওয়া আছে এবং করলে মহাপুরস্কার এবং না করলে কঠিন শাস্তির কথা লেখা আছে। ঐ বই দুইটির একটি আল্লাহর কোর’আন এবং অন্যটি রসুলের হাদিস। ঐ বই দুইটির সম্পর্কে যখন কেউ “জেহাদি বই, আপত্তিকর বই” ইত্যাদি উক্তি করতে পারে না, সেখানে আমার ছোট ছোট দু’একটি পুস্তিকাকে আপত্তিকর আখ্যা দেওয়াও যুক্তিহীন।
আমরা কোর’আন-হাদিস দেখিয়ে, যুক্তি দিয়ে, প্রমাণ দিয়ে মানুষকে বোঝাতে চেষ্টা করছি যে তওহীদ ভিত্তিক দীন, জীবনব্যবস্থা ছাড়া মানুষের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তার আর কোনো বিকল্প পথ নেই। বর্তমান অশান্ত, পৃথিবীই তার প্রমাণ। এখানে জোর জবরদস্তির কোনো স্থান নেই, মানুষকে জোর করে কোনো কিছু বোঝানো যায় না এটা সাধারণ জ্ঞান (Common sense), মানুষ যদি একে গ্রহণ করে তবে দেশে তওহীদ ভিত্তিক দীন, জীবন-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, আর যদি মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া না দেয়, মানুষের সার্বভৌমত্বকেই, মানুষের উলুহিয়াতকেই আঁকড়ে ধরে থাকে তবে আমাদের কিছু করার নেই। আল্লাহর যা ইচ্ছা করবেন। আর যদি মানুষ আমাদের কথা বোঝে, সাড়া দেয়, দাজ্জালের শেখানো বর্তমানের মানুষের সার্বভৌমত্বকে অর্থাৎ র্শেক ও কুফর ছেড়ে দিয়ে তওবা করে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব অর্থাৎ তওহীদভিত্তিক দীন, জীবন-ব্যবস্থাকে গ্রহণ করে নেয় তাহলে তারা পার্থিব ও পরকাল দুই জীবনে শান্তি ও গৌরবের অধিকারী হবে।
এটা সুস্পষ্ট যে বর্তমানে মানবজাতির সীমাহীন দুর্ভোগ ও দুর্দশার কারণ তারা ইহুদি-খ্রিষ্টান ‘সভ্যতা’ অর্থাৎ দাজ্জালের দেওয়া জীবনব্যবস্থা বা সিস্টেমগুলি মেনে জীবন চালাচ্ছে। এই দুর্দশা থেকে তাদেরকে মুক্তি পেতে হলে তাদেরকে আগে এই সিস্টেমকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং গ্রহণ করতে হবে স্রষ্টার দেওয়া নিখুঁত সিস্টেম বা সত্যদীন যা কেবলমাত্র হেযবুত তওহীদের কাছেই আছে। এই সিস্টেমটি মানবজাতির সামনে প্রকাশ করা আমাদের কেবল নৈতিক দায়িত্বই নয়, এটা আমাদের সংগ্রাম, আমাদের জেহাদ। প্রচলিত সিস্টেমের ধারক-বাহক-অনুসারীরা আমাদের যতই বিরোধিতা করুক, আল্লাহর সত্যদীনকে সমুন্নত করার প্রচেষ্টা আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে।
আল্লাহ সুরা তওবার ৩২ নং আয়াতে বলেছেন- তারা (কাফের, মোশরেকরা) তাদের মুখের ফুৎকার দিয়ে আল্লাহর নুরকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নুরের পূর্ণ উদ্ভাসন ছাড়া অন্য কিছু চান না, তা কাফেরদের কাছে যত অপ্রীতিকরই হোক। এনশা’আল্লাহ তারা হেযবুত তওহীদকেও ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিতে পারবে না।
[সম্পাদনায়: রাকীব আল হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট, ফেসবুক: /rblee77, মতামতের জন্য যোগাযোগ: ০১৬৭০-১৭৪৬৪৩, ০১৬৭০-১৭৪৬৫১]

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...