হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

মোসলেম উম্মাহর বার্ষিক মহাসম্মেলন

Hazzইসলামের অন্য সব কাজের মতোই আজ হজ্ব সম্বন্ধেও এই জাতির আকীদা (ঈড়হপবঢ়ঃ) বিকৃত হয়ে গেছে। এই বিকৃত আকীদায় হজ্ব আজ সম্পূর্ণরূপে একটি আধ্যাত্মিক ব্যাপার, আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করার পথ। প্রথম প্রশ্ন হোচ্ছে- আল্লাহ সর্বত্র আছেন, সৃষ্টির প্রতি অনু-পরামাণুতে আছেন, তবে তাঁকে ডাকতে, তাঁর সান্নিধ্যের জন্য এত কষ্ট কোরে দূরে যেতে হবে কেন? তাঁর নিজের আত্মা তিনি মানুষের দেহের মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন (সূরা আল-হিজর ২৯)। অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের মধ্যে তিনি রোয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি বোলেছেন-নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অতি সন্নিকটে (সূরা আল-বাকারা ১৮৬, সূরা সাবা ৫০, সূরা আল-ওয়াকেয়াহ ৮৫), তারপর আরও এগিয়ে গিয়ে বোলছেন- আমি (মানুষের) গলার রগের (রক্তবাহী ধমনীর) চেয়েও সন্নিকটে (সূরা কাফ ১৬)। যিনি শুধু অতি সন্নিকটেই নয়, একবারে গলার রগের চেয়েও নিকটে তাকে ডাকতে, তার সান্নিধ্যের আশায় এত দূরে এত কষ্ট কোরে যেতে হবে কেন? যদি তর্ক করেন যে আল্লাহ চান যে আমরা তার ঘরে যাই, তবে জবাব হোচ্ছে প্রথমতঃ ঘরের মালিকই যখন সঙ্গে আছেন তখন বহু দূরে তার পাথরের ঘরে যাবার কী প্রয়োজন আছে, দ্বিতীয়তঃ আসল হজ্ব হয় আরাফাতের ময়দানে, আল্লাহর ঘর কাবায় নয়। তার ঘর দেখানোই যদি উদ্দেশ্য হোয়ে থাকে তবে কাবাকে হজ্বের আসল কেন্দ্র না কোরে কাবা থেকে অনেক দূরে এক খোলা মাঠকে কেন্দ্র কোরলেন কেন? তৃতীয় প্রশ্ন হোচ্ছে- ধোরে নিলাম আল্লাহ আরাফাতের ময়দানেই বোসে আছেন। সেখানে যেয়ে তার সামনে আমাদের উপস্থিত হবার জন্য তিনি বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত কোরে দিয়েছেন কেন? আমাদের সঙ্গে না থেকে তিনি যদি আরাফাতের মাঠেই থেকে থাকেন তবে যে যখন পারে তখন সেখানে যেয়ে তো তার সামনে লাব্বায়েক বোলে হাজিরা দিতে পারে। তা না কোরে তিনি আদেশ দিয়েছেন বছরের একটা বিশেষ মাসে, একটা বিশেষ তারিখে তার সামনে হাজির হবার। একা একা যেয়ে তাকে ভালো ভাবে ডাকা যায়, নাকি সম্পূর্ণ অপরিচিত জায়গায়, অপরিচিত পরিবেশে, লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ের ধাক্কাধাক্কির মধ্যে দাঁড়িয়ে তাকে ভালো ভাবে, মন নিবিষ্ট কোরে ডাকা যায়? কিন্তু অবশ্য কর্তব্য ফরদ কোরে দিয়েছেন একা একান্তে তাকে ডাকা নয়, ঐ বিশেষ তারিখে লক্ষ লোকের ঠেলাঠেলির মধ্যে।

শেষ নবীর (দ:) মাধ্যমে ইসলামের যে শেষ সংস্করণটি আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠালেন সেটার উদ্দেশ্য, উদ্দেশ্য অর্জনের প্রক্রিয়া অর্থাৎ সামগ্রিক রূপ যাদের মস্তিষ্ক থেকে বিদায় নিয়েছে, এক কথায় যাদের আকীদা বিকৃত হোয়ে গেছে, তাদের কাছে এ সব প্রশ্নের জবাব নেই। দীন শব্দের অর্থ জীবন-ব্যবস্থা, জীবন-বিধান। যে আইন-কানুন, নিয়ম দণ্ডবিধি মানুষের সমষ্টিগত, পারিবারিক, সামাজিক রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত জীবনকে নিয়ন্ত্রণ কোরবে সেটারই একত্রিত, সামগ্রিক রূপ হোচ্ছে দীন। এ দীন আল্লাহর সৃষ্টও হোতে পারে, মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূতও হোতে পারে, দু’টোই দীন। মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত যে দীন তা স্বভাবতঃই ভারসাম্যহীন, কারণ তা অতি সীমিত জ্ঞান থেকে তৈরি। আর আল্লাহ যে দীন সৃষ্টি কোরেছেন তা ভারসাম্যযুক্ত (সুরা বাকারা ১৪৩)। আল্লাহর সৃষ্ট দীন অর্থাৎ ইসলাম মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, আইন দণ্ডবিধি ইত্যাদি মানুষের জীবনের সমষ্টিগত ও তার আত্মার যত রকমের প্রয়োজন তার সব কিছুরই একটা ভারসাম্যপূর্ণ মূল-নীতি নির্দেশনা। সুতরাং এই শেষ দীনের অন্যান্য সব বিষয়ের মতো হজ্বও ভারসাম্যপূর্ণ। এতে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ইত্যাদির যেমন অংশ আছে তেমনি আত্মার উন্নতির, পরিচ্ছন্নতারও অংশ আছে, দু’টোই আছে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায়, এর যে কোনো একটির গুরুত্ব কমিয়ে দিলেই আর সেই ভারসাম্য থাকবে না, তা আর দীনে ওয়াসাতা থাকবে না, তা আজকের এই বিকৃত ইসলাম হোয়ে যাবে। যে কারণে আল্লাহর প্রতি মন-সংযোগ জামাতের সালাতের চেয়ে নির্জনে অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও ফরদ হোচ্ছে ঐ জামাতে যোগ দেওয়া, ঠিক সেই কারণে নির্জনে বোসে আল্লাহকে ডাকায় বেশি মন-সংযোগ, নিবিষ্টতা (ঈড়হপবহঃৎধঃরড়হ) হওয়া সত্ত্বেও আদেশ হোচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষের কোলাহলে, জনতার সাথে একত্র হোয়ে তার সামনে হাজির হওয়া। কারণ অন্যান্য বিকৃত ধর্মগুলির মতো শেষ ইসলামের আকীদা শুধু একতরফা অর্থাৎ আত্মার ধোয়ামোছা, পরিষ্কার পবিত্রতা নয়।

আল্লাহর খলিফা মানুষ তৈরির বিপক্ষে মালায়েকরা অর্থাৎ ফেরেশতারা যে যুক্তি দেখিয়েছিলো তা হোল এই যে- হে আল্লাহ তোমার এই সৃষ্টি, এই খলিফা পৃথিবীতে ফাসাদ (অন্যায়, অবিচার, অশান্তি) ও সাফাকুদ্দিমা (মারামারি, রক্তপাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ) কোরবে। মালায়েকেরা যে দুটি শব্দ ব্যবহার কোরলো সে দু’টোই সমষ্টিগত, ব্যক্তিগত নয়। অর্থাৎ মূল প্রশ্ন, মূল সমস্যাই সমষ্টিগত। এ মূল সমস্যার সমাধান আল্লাহ দিলেন- দীনুল ইসলাম, এটাও সমষ্টিগত। ব্যক্তির স্থান এখানে নগণ্য। ব্যক্তির মূল্য শুধু এটুকুই যে ব্যক্তি দিয়েই সমাজ, জাতি গঠিত; ব্যক্তি জাতির একটি একক (ঁহরঃ), এর বেশি নয়। সমষ্টির এই একক হিসাবে
ব্যক্তির যেমন মূল্য আছে, তেমনি সমষ্টির বাইরে এর কোনো দাম নেই। উদাহরণ হিসাবে একটি সামরিক বাহিনীকে নেয়া যায়। একটি একটি সৈনিক নিয়েই বাহিনীটি গঠিত। ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি সৈন্য যতো ভালো যোদ্ধা হবে, বাহিনীর জন্য তত ভালো। সেনাপতি চেষ্টা কোরবেন যাতে তার বাহিনীর প্রতিটি সৈনিক দক্ষ যোদ্ধা হয়, যদি তিনি দেখেন যে কয়েকটি সৈনিক তেমন ভালো কোরছে না তবে স্বভাবতই তিনি তাদের প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেবেন, তাদের শিক্ষার ওপর বিশেষ চাপ দেবেন। এমনকি যদি তিনি একটি মাত্র সৈন্যকেও দেখেন যে তার রাইফেলের গুলি লক্ষ্যস্থলে লাগছে না, তাহোলে তাকে আরো ভালো কোরে শেখাবেন কেমন কোরে গুলি কোরলে লক্ষ্যস্থলে লাগবে, অভ্যাস করার জন্য আরও গুলি সরবরাহ কোরবেন। কিন্তু ঐ বাহিনীর বাইরে ঐ একক সৈন্যের কোনো মূল্য নেই। ঐ সামরিক বাহিনী যদি ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ হোয়ে, সেনাপতির পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধ না কোরে সৈন্যরা এককভাবে যুদ্ধ শুরু করে তবে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ঐ বাহিনী শত্র“র আক্রমণের সম্মুখে অবশ্যই ধ্বংস হোয়ে যাবে। প্রতিটি সৈন্য যদি অতি দক্ষ যোদ্ধাও হয় তবুও তাই হবে।

সুতরাং এ দীনেও ব্যক্তির মূল্য ঐ সেনাবাহিনীর একটি সৈনিকের চেয়ে বেশি নয়। যে পাঁচটি স্তম্ভের (ফরদে আইন) ওপর এই দীন স্থাপিত তার চারটিই সমষ্টিগত, জাতিগত। তওহীদ, (ফরদ) সালাহ, যাকাত, হজ্ব এই চারটিই সমষ্টিগত, জাতিগত; শুধুমাত্র রোযা ব্যক্তিগত। বর্তমানে বিকৃত, বিপরীতমুখী যে দীন আমরা মেনে চোলেছি তাতে তওহীদকে সমষ্টিগতভাবে বুঝা অনেকের পক্ষে অসুবিধাকর হোতে পারে। তাদের বুঝার জন্য সংক্ষেপে বোলছি- আল্লাহ যে তওহীদকে স্বীকৃতি দেবেন, গ্রহণ কোরবেন, সে তওহীদ সর্বব্যাপী, মানুষের জীবনের সর্বস্তরের সমস্ত অঙ্গনের তওহীদ; তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, আইন, দণ্ডবিধি, শিক্ষা, অর্থনীতি ইত্যাদি সমস্ত কিছুর উপর তওহীদ; অর্থাৎ সমষ্টিগত তওহীদ। জীবনের ক্ষুদ্রতম কোনো বিষয়ও তা থেকে বাদ থাকবে না। এর নিচে কোনো তওহীদ সেই সর্বশক্তিমান স্রষ্টা গ্রহণ কোরবেন না। বর্তমানে আমাদের তওহীদ জীবনের শুধু ব্যক্তিগত ভাগে ছাড়া আর কোথাও নেই। এই আংশিক ও ক্ষুদ্র তওহীদ আল্লাহর পক্ষে গ্রহণ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। প্রকৃত তওহীদ সমষ্টিগত, জাতিগত। আল্লাহ কোর’আনে বার বার বোলেছেন- আসমান ও জমিনের সার্বভৌমত্ব আল্লাহর। তিনি মানব জাতির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক জীবন পরিচালনার জন্য যে সংবিধান (কোর’আন) ও ঐ সংবিধানের ওপর ভিত্তি কোরে যে আইন-কানুন, দণ্ডবিধি দিলেন সেটার সার্বভৌমত্ব হোল আল্লাহর। বৃহত্তর ও সমষ্টিগত জীবনে গায়রুল্লাহর সার্বভৌমত্বকে স্বীকার ও গ্রহণ কোরে নিয়ে শুধুমাত্র ব্যক্তিজীবনের সার্বভৌমত্বটুকু আমরা আল্লাহর জন্য রেখেছি। সেই জাল্লে-জালাল, আযিজুল জব্বার, স্রষ্টা ভিক্ষুক নন যে তিনি এই ক্ষুদ্র তওহীদ গ্রহণ কোরবেন। তাছাড়া ওটা তওহীদই নয়, ওটা র্শেক ও কুফর।

সুতরাং শেষ ইসলামের প্রথম ও মুখ্য দিকটা হোচ্ছে জাতীয়, রাষ্ট্রীয়; ব্যক্তিগত দিকটা গৌণ যদিও ভারসাম্যযুক্ত। তাই ফরদ অর্থাৎ অবশ্যই করণীয়, যেটা না কোরলে চোলবে না, সেই ফরদ সালাহ কায়েমের আদেশ জামাতে, সবার সঙ্গে, হজ্ব করার আদেশ হোচ্ছে বিশাল জন সমাবেশে। আর নফল সালাহ অর্থাৎ ব্যক্তিগত সালাহ যা অবশ্য করার নয়, ব্যক্তির ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেয়া হোয়েছে। এ থেকেই তো পরিষ্কার হোয়ে যায় যে ইসলামে জাতীয় বিষয়ই প্রধান ও মুখ্য। ফরদ অর্থাৎ জাতীয় বিষয়গুলিকে বাদ দিয়ে নফল অর্থাৎ ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে থাকলে তা জায়েজ হবে না, যেমন জায়েজ হবে না ফরদ সালাহ বাদ দিয়ে রাত ভর নফল সালাহ পড়লে। সালাহ যেমন জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যযুক্ত হজ্বও তেমনি। বলা যায় জামাতে সালাহ্’রই বৃহত্তম সংস্করণ হজ্ব। এই দীনের সমস্ত জাতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হোচ্ছে এবাদতের স্থানগুলি অর্থাৎ মসজিদ, কারণ মোসলেমের জীবনের, জাতীয় ও ব্যক্তিগত উভয় জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য এবলিসের চ্যালেঞ্জে আল্লাহকে জয়ী করানো ও পৃথিবীতে ন্যায় বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা। সুতরাং মোসলেমের জীবনে ইহজীবন ও পরজীবনের, দেহের ও আত্মার কোনো বিভক্তি থাকতে পারে না কারণ দেহ থেকে আত্মার পৃথকীকরণ বা আত্মা থেকে দেহ পৃথকীকরণের একটাই মাত্র পরিণতি-মৃত্যু। তাই এই জাতির সমস্ত কর্মকাণ্ড এক অবিচ্ছিন্ন এবাদত। জামাতে সালাতের উদ্দেশ্য হলো মোসলেম পাঁচবার তাদের স্থানীয় কর্ম-কাণ্ডের কেন্দ্র মসজিদে একত্র হবে, তাদের স্থানীয় সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা পরামর্শ কোরবে, সিদ্ধান্ত নেবে, তারপর স্থানীয় ইমামের নেতৃত্বে তার সমাধান কোরবে। তারপর সপ্তাহে একদিন বৃহত্তর এলাকায় জামে মসজিদে জুমা’র সালাতে একত্র হোয়ে ঐ একই কাজ কোরবে। তারপর বছরে একবার আরাফাতের মাঠে পৃথিবীর সমস্ত মোসলেমদের নেতৃস্থানীয়রা একত্র হোয়ে জাতির সর্বরকম সমস্যা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি সর্বরকম সমস্যা, বিষয় নিয়ে আলোচনা কোরবে, পরামর্শ কোরবে, সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ স্থানীয় পর্য্যায় থেকে ক্রমশঃ বৃহত্তর পর্য্যায়ে বিকাশ কোরতে কোরতে জাতি পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু মক্কায় একত্রিত হবে। একটি মহাজাতিকে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে বেঁধে রাখার কী সুন্দর প্রক্রিয়া।

আল্লাহ ও তাঁর রসুল (দ:) এ অপূর্ব সুন্দর প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট কোর দিলেও তা এই জাতির ঐক্যকে ধোরে রাখতে পারলো না আকীদার বিকৃতির কারণে। এই দীনের অতি বিশ্লেষণ কোরে, সূক্ষ¥াতিসূক্ষ্ম মসলা-মাসায়েল উদ্ভাবন কোরে জাতিটাকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন কোরে একে এক মৃতপ্রায় জাতিতে পরিণত কোরে দেওয়ার পরও এর সব রকম, অর্থাৎ জাতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র মসজিদ ও কাবাই ছিলো, কারণ তখনও এই দীনকে জাতীয় ও ব্যক্তিতে বিভক্ত করা হয় নি। তারপর যখন ঐ ঐক্যহীন, ছিন্ন-বিছিন্ন জাতিটাকে আক্রমণ কোরে ইউরোপীয় জাতিগুলি দাসে পরিণত কোরে খণ্ড খণ্ড কোরে এক এক জাতি এক এক খণ্ড শাসন ও শোষণ কোরতে শুরু করলো তখন ঐ শাসনের সময় জাতির জীবনকে জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনে ভাগ করা হলো অর্থাৎ দেহ থেকে আত্মাকে বিচ্ছিন্ন করা হলো এবং অবশ্যম্ভাবীরূপে জাতি একটি মৃত জন-সংখ্যায় পরিণত হলো। সালাহ ও হজ্ব হোয়ে গেলো ‘এবাদত’ ব্যক্তিগত উপাসনা, যেখানে রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক কোনো কিছুর স্থান নেই। আল্লাহর আইন ও দণ্ডবিধির তো কোনো প্রশ্নই উঠে না, কারণ সেগুলোকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে সেখানে ইউরোপীয় খ্রিস্টান ইহুদিদের তৈরি আইন, অর্থনীতি, দণ্ডবিধি, শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলো। ঐ সময় থেকেই দুই এলাহ গ্রহণ করার ফলে এই জাতি কার্যতঃ মোশরেক ও কাফের হোয়ে আছে। যদিও আকীদার বিকৃতির কারণে তা উপলব্ধি করার মতো বোধশক্তিও অবশিষ্ট নেই।

যামানার এমামের লেখা থেকে সম্পাদিত।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...