হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হলে সারা দুনিয়া তাদের স্যালুট দেবে -হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

মুসলমানরা সত্যের পথে ঐক্যবদ্ধ হলে অচিরেই সারা দুনিয়া তাদেরকে স্যালুট দিবে বলে মন্তব্য করেছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। গত ২৮ মে ২০১৮ তারিখ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে মুখ্য আলোচক হিসেবে ভাষণ দানকালে এ কথা বলেন তিনি। ‘মাহে রমজানের অঙ্গীকার, ঐক্যবদ্ধ জাতি গড়ব এবার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল রাজধানীর মিরপুর-২ এর চিড়িয়াখানা রোডের ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অনলাইন টেলিভিশন এসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেটিভি অনলাইনের চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মো. আলী হোসেন, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মিরপুর থানা সভাপতি আবদুল হক বাবুল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক নূরে আলম। এ সময় ইফতারপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক তার বক্তব্যে বলেন, ‘মুসলমানদের এখন প্রধান কর্তব্য হচ্ছে শিয়া, সুন্নি, হানাফি, হাম্বলি, এই পীর, ওই পীর, এই তরিকা, ওই তরিকা ইত্যাদি বিভেদ ভুলে সবাই একটা প্ল্যাটফর্মে আসা, একমঞ্চে আসা। তার জন্য একটি ঐক্যসূত্র লাগবে। নবী করিম (সা.) যেই সূত্র অনুসরণ করেছেন সেটা লাগবে। তিনি কী করেছেন? ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- মুহাম্মাদুর রাসুলাল্লাহ’ এই মূলমন্ত্র দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আমাদেরকেও এই ঐক্যসূত্র দিয়েই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হলে দুই দিকে সফলতা। একদিকে ইহকালীন, আরেকদিকে পরকালীন। পরকালীন সফলতা জান্নাত, আর ইহকালীন সফলতা হচ্ছে আমরা পৃথিবীর সেরা জাতিতে পরিণত হব। আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম, যদি মুসলমান জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সারা দুনিয়া তাদেরকে স্যালুট দেবে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে জাতি হবে সুপার পাওয়ার। আপনাদের কোনো ভয় থাকবে না। একা একজন মেয়ে মানুষ স্বর্ণালঙ্কার পরিহিত অবস্থায় মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে যাবে কোনো ভয় থাকবে না। জঙ্গিবাদের ভয় থাকবে না। সন্ত্রাসের ভয় থাকবে না। অর্থনৈতিক অবিচার হবে না। রক্তারক্তি হবে না।’
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার আজ মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়েছে। হ্যা, শক্তি ছাড়া উপায় নাই। কিন্তু শক্তির সাথে আদর্শও লাগবে। শুধু শক্তি দিয়েই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সফলতা আসবে না। আল্লাহর রসুল যেই সমাজে এসেছিলেন সেই সমাজও মাদকে আক্রান্ত ছিল। তিনি যখন ওই সমাজব্যবস্থাকে তওহীদ দিয়ে পাল্টিয়ে দিলেন, তখন ওই সমাজের মানুষগুলোই মাদকের পাত্র এনে রাস্তায় ফেলে দিল। কাজেই আগেরটা আগে করেন। জাতিকে আল্লাহর হুকুমের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করেন। তাহলে ওই মাদকাসক্তি থাকবে না, ওই জঙ্গিবাদ থাকবে না, ওই সা¤্রাজ্যবাদীরাও আমাদের দিকে কালো থাবা বাড়ানোর সাহস পাবে না।’
পরকাল সুন্দর করতে হলে দুনিয়াকে আগে সুন্দর করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা মুসলমানরা আমাদের দুনিয়াকে দাজ্জালের হাতে বন্ধক রেখে, শয়তানের হাতে ছেড়ে দিয়ে রেখেছি। তারা সমস্ত দুনিয়াকে নরককুণ্ড বানিয়েছে। আর আমরা দুনিয়ার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে, দুনিয়াকে কুৎসিত করে রেখে পরকালে জান্নাতে যাবার ব্যর্থ চেষ্টা করছি। ইসলাম বোঝার জন্য মৌলভী সাহেব, পীর সাহেবদের দিকে তাকাবেন না। গত তেরো শ’ বছর ধরে ইসলামকে তারা জায়গামত রাখে নাই। সেরা জাতিকে তারা গোলাম জাতি বানিয়েছে। ঐক্যবদ্ধ জাতিকে টুকরো টুকরো করেছে। কাজেই তাকাতে হবে আল্লাহর রসুলের দিকে। জানতে হবে আল্লাহ কী বলেছেন, আল্লাহর রসুল কী করেছেন। সেদিকে তাকান। কোন পীর, কোন মুফতি, কোন আলেম, কোন মুহাদ্দিস, কোন ফকিহ কী বলেছে সেদিকে তাকালে ধ্বংস হয়ে যাবেন।’
আল্লাহর রসুলকে মুক্তির নবী ও সাম্যের নবী অভিহিত করে হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, ‘আল্লাহর রসুলকে একদিন একজন সাহাবী বললেন, রসুলাল্লাহ আপনি দোয়া করুন, এই কাফের-মোশরেকরা যেন ধ্বংস হয়ে যায়। এই কথা শুনে রসুলাল্লাহ সোজা হয়ে বসলেন। তারপর বললেন, শিগগিরই এমন সময় আসবে একা একজন সুন্দরী যুবতী নারী রাতের অন্ধকারে স্বর্ণালঙ্কার পরিহিত অবস্থায় সানা থেকে হাদরামাউত পর্যন্ত হেঁটে যাবে আল্লাহ এবং বন্য জন্তুর ভয় ছাড়া কারো ভয় থাকবে না। সত্যিই এমন নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছিল পরবর্তীতে এবং ওটাই ইসলাম। যাদের পেটের ভাত ছিল না, তারা সমৃদ্ধ হয়ে গেল। যারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করত তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেল। যাদের সাহস ছিল না, তারা সাহসী হয়ে গেল। আল্লাহর রসুল নিজের দাসকে মুক্ত করে নিজের পুত্র বলে ঘোষণা করলেন। সেনাবাহিনীর প্রধান বানালেন। মক্কা বিজয়ের দিনে অত্যাচারিত নির্যাতিত নিপীড়িত বেলালকে আল্লাহর রসুল বললেন কাবার উপরে উঠে আজান দিতে। ইতিহাস সাক্ষী হয়ে থাকল- আল্লাহর রসুল প্রমাণ দিলেন, ‘আমি সাম্যের নবী, আমি মুক্তির নবী। আমি রহমত, বরকত দিতে এসেছি, এজন্যই আমি রহমাতাল্লিল আলামিন। ধর্মব্যবসায়ীরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে আমি নাকি তোমাদের ধর্ম নষ্ট করতে এসেছি। আসলে তা নয়। আমি তোমাদেরকে মুক্তি দিতে এসেছি, মর্যাদা ও অধিকার দিতে এসেছি।’

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...