হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ভুল চিকিৎসায় আরোগ্য সম্ভব নয়

রাকীব আল হাসান
বর্তমানে আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, ও জাতীয় জীবন অন্যায়-অবিচার, হানাহানি-রক্তপাত এককথায় অশান্তিতে পরিপূর্ণ। এর পেছনে অনেকে অনেক ধরণের কারণ দেখাতে পারেন তবে সেগুলো হলো আনুষঙ্গিক। সকল অশান্তির মূল কারণ হলো আমরা আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা বাদ দিয়ে নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছি নিজেদের জন্য একটি ভারসাম্যহীন জীবনব্যবস্থা। যার পরিণতিতে আজ জাতির আকাশে অশান্তির কালো মেঘ। এখন এর থেকে পরিত্রাণের জন্য বিভিন্ন উপায় খোঁজা হচ্ছে। স্বভাবতই রোগীর রোগ না চিনে অনুমানের ভিত্তিতে চিকিৎসা করলে যা হবার সম্ভাবনা থাকে তাই এই জাতির হচ্ছে। ভুল ঔষধ সেবন করলে যেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হয়, তেমনি এই জাতির অশান্তির মূল কারণ না জেনে অনুমানের ভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে দিন দিন আমরা আরো বেশি অশান্তিতে পতিত হচ্ছি।
যারা স্রষ্টার অস্তিত্বকে বিশ্বাস করতে রাজী নন, তাদের মতো নিরেট, জড়বুদ্ধির অধিকারীদের কাছে আমার কোনো কথা নেই। ধোঁয়া থাকলেই যে আগুন থাকবে তা তারা বিশ্বাস করেন কিন্তু একই সূত্রভিত্তিক সৃষ্টি থাকলে তার স্রষ্টা অবশ্যম্ভাবী তা তারা মানতে নারাজ। আমার কথা হলো যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করে, নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, হজ্ব করে তাদের তো অন্তত এই বিষয়ে ভাবার প্রয়োজন যে, আমরা যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ পড়ি সে আল্লাহ আমাদের সামাজিক এবং জাতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য একটা ব্যবস্থাও দিয়েছেন। কাজেই সবাই মিলে বসে দেখি না আল্লাহর দেওয়া ব্যবস্থাটিতে সংকট থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় আছে কিনা।
যে দীন আমাদের জাহান্নামের সঙ্কট থেকে বাঁচাতে পারে সেই দীন কি এই সামান্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক ইত্যাদি সঙ্কট থেকে আমাদের পরিত্রাণ দিতে সক্ষম নয়? কিন্তু কোনো ভাবেই এই জাতি ঐদিকে পা বাড়াচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ ইহুদি-খ্রিষ্টানদের অপপ্রচার। তারা মিডিয়ায়, শিক্ষা ব্যবস্থায় অনবরত এই কথা প্রচার করেছে এবং করছে যে, ধর্ম একটি ব্যক্তিগত বিষয় জাতীয়ভাবে এটা কোনো সমাধান দিতে পারে না। হ্যাঁ, তাদের এই কথা সঠিক তবে সেটা ইসলাম ধর্ম নয়, সেটা হলো খ্রিষ্ট ধর্ম যার ব্যর্থতার পরিণামেই ধর্মনিরপেক্ষতার জন্ম হয়েছিল।
ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাসযোগ্য তথাকথিত কোনো ধর্মের নাম নয়। ইসলাম হলো পূর্ণাঙ্গ এবং শাশ্বত জীবনব্যবস্থা। ইসলামে সকল সমস্যার সমাধান দেওয়া আছে। কাজেই এখন মুসলিমদের তাদের দাবীতে সত্যবাদী হওয়ার সময় এসেছে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে প্রকৃত ইসলামের পথে সর্বপ্রথম বাধা হলো ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি। কাজেই ধর্মব্যবসায়ী আলেম মোল্লাদের অনৈক্য, হানাহানি আর ফতোয়াবাজী, সংকীর্ণতা ইত্যাদি দেখে হতাশ হওয়া চলবে না। মনে রাখতে হবে ধর্মব্যবসায়ী আলেম মোল্লারা মসজিদে, খানকায়, আর মাদ্রাসায় যে ইসলামটা চর্চা করছে ওটা আল্লাহ-রসুলের ইসলাম নয়।
ওটা ব্রিটিশ খ্রিষ্টানরা তাদের প্রায় ১৫০ বছর ধরে শিখিয়েছে। কাজেই ওটা দিয়ে ধর্ম ব্যবসা করে খাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। প্রকৃত ইসলাম কোনটা, কোন ইসলাম দুনিয়া শাসন করবে, কোন ইসলাম জাতীয়, রাষ্ট্রীয় সকল সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম; কোন ইসলামে সকল মত, পথ, তরিকা, ফেরকা, বর্ণ মিটিয়ে দিয়ে সমস্ত মানবজাতিকে এক জাতি করা সম্ভব সেই সহজ সরল অনাবিল ইসলামটা খোঁজার সময় এসেছে। যে ইসলাম দুনিয়ার জীবনে দেবে শান্তি, নিরাপত্তা এবং আখেরাতে দেবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...