হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

তারাবীর সালাহ: কতভাগ ইসলাম কতভাগ ব্যবসা?

0000রিয়াদুল হাসান:
প্রথম কথা হলো, ইসলামের সকল প্রকার আমলের পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর তওহীদের প্রতি ঈমান। এই তওহীদ হচ্ছে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোন সার্বভৌমত্বের মালিক বা হুকুমদাতা নেই। বর্তমানে ১৬০ কোটির মুসলিম নামক জাতিটি তাদের সার্বিক জীবনে আল্লাহর দেওয়া বিধানগুলিকে প্রত্যাখ্যান করে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদি খ্রিষ্টান সভ্যতার তৈরি করা বিধান, মতবাদ, তন্ত্র-মন্ত্র মানছে। এর অর্থ তারা তাদের সার্বিক জীবনের হুকুমদাতা, ইলাহ মানছে মানুষকে। এই কারণে তারা কলেমার চুক্তি থেকে বহির্গত হয়ে গেছে, অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে তারা আর ইসলামে নেই। একটু আগেই বললাম, ইসলামের সকল আমল কেবল যারা ইসলামে আছে অর্থাৎ মো’মেন-মুসলিমের জন্য। তাই যেহেতু এ জাতি কলেমা থেকেই সরে গেছে তাই তাদের তারাবী কেন কোনো আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। আমল করবার পূর্বে সত্যকে গ্রহণ করতে হবে, তওহীদে ফিরে আসতে হবে।
যাই হোক, মূল প্রসঙ্গে আসি। তারাবী সালাহ আসলে কী, ইসলামে এর স্থান কোথায় তা বর্তমানের ধর্মব্যবসায়ী আলেম মোল্লাদের ধারণার সম্পূর্ণ বাইরে। তারা সওমের মাসে প্রতি রাত্রে ২০ রাকাত তারাবীর সালাহ এমনভাবে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন যেন তারাবী না পড়লে সওমের অঙ্গহানী ঘটবে, এমনকি কেউ যদি সওম নাও রাখে তবু তার তারাবী পড়া উচিত। তাই বাস্তবে দেখা যায়, যারা ফরদ সালাহর ব্যাপারে গাফেল, তারাও তারাবীর ব্যাপারে সতর্ক। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, কোর’আনে বা হাদিসে তারাবী শব্দটিই নেই। বলাবাহুল্য যে, আকিদার বিকৃতি ছাড়াও তারাবীর এত গুরুত্ব দেওয়ার পেছনে ধর্ম-ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক স্বার্থই প্রধান।
ইসলামে তারাবীর উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব:
গভীর রাতে রসুলাল্লাহ সব সময়ই অতিরিক্ত সালাহ করতেন, একে ‘কিয়াম আল লাইল’ বলা হয় যা বিশেষভাবে তাঁর জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। তিনি ব্যক্তিগত সালাহ কায়েমের জন্য মসজিদের নিকটেই একটি ছোট ঘর তৈরি করেছিলেন। রমাদান মাসে তিনি এশার পর পরই নিজ গৃহে এই সালাহ কায়েম করে ফেলতেন এবং অন্যান্য সময়ের চেয়ে সালাহ দীর্ঘ করতেন। দীর্ঘ করার উদ্দেশ্য ছিল মূলতঃ কোর’আনের মুখস্থ আয়াতগুলি ঝালিয়ে নেওয়া। একবার রমাদান মাসে তিনি এশার পরে নফল সালাহ কায়েম করছেন। বাইরে থেকে তাঁর উচ্চৈস্বরে ক্বেরাতের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। কয়েকজন সাহাবী ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে রসুলের সাথে জামাতে শরীক হন। পরদিন এই সংবাদ পেয়ে আরো বেশ কিছু সাহাবী আসেন রসুলের সাথে সালাহ কায়েম করার জন্য। কিন্তু সেদিন আর রসুলাল্লাহ সালাতে দাঁড়ান না এবং ঘরের বাইরেও আসেন না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে আসহাবগণ উচ্চৈস্বরে রসুলাল্লাহকে ডাকতে থাকেন এবং তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ঘরের দরজায় ছোট ছোট পাথর ছুঁড়ে মারতে থাকেন। তাঁদের এ আচরণে রাগান্বিত হয়ে রসুলাল্লাহ বেরিয়ে এসে বলেন, ‘তোমরা এখনও আমাকে জোর করছ? আমার আশঙ্কা হয় এই সালাহ তোমাদের জন্য আল্লাহ না ফরদ করে দেন। হে লোকসকল! তোমরা এই সালাহ নিজ নিজ ঘরে গিয়ে কায়েম কর। কারণ কেবলমাত্র ফরদ সালাহ ব্যতীত তোমাদের জন্য সর্বোত্তম সালাহ হচ্ছে সেই সালাহ যা নিজ গৃহে কায়েম করা হয়।” (যায়েদ বিন সাবিত রা. থেকে বোখারী)। আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করেন, রমাদান মাসে রসুলাল্লাহর সালাহ কেমন ছিল। তিনি বলেন, রসুলাল্লাহ রমাদান মাসে এবং অন্যান্য সময়ে রাতে এগারো রাকাতের বেশি সালাহ কায়েম করতেন না। তিনি চার রাকাত সালাহ করতেন, আবার চার রাকাত সালাহ করতেন (অর্থাৎ আট রাকাত), এবং তারপরে তিন রাকাত সালাহ (বেতর) করতেন (বোখারী)।
এর পর রসুলের জীবদ্দশায় জামাতে এই সালাহ আর কায়েম করার ইতিহাস নেই। প্রথম খলিফা আবু বকরের (রা.) সময়েও তারাবী সালাহ কায়েমের কোন নজির নেই। তাহলে প্রশ্ন হলো, আজ এত গুরুত্বের সাথে প্রায় বাধ্যতামূলক ২০ রাকাত তারাবী পড়ার প্রচলন হলো কীভাবে? এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে আকিদার বিকৃতি হয়ে ইসলামের ছোট বিষয়গুলিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ করে ফেলা। আলেমগণ তারাবী সম্পর্কে তাদের মতামত প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে ওমরের (রা.) বরাত দিয়ে থাকেন। প্রকৃত ঘটনাটি ছিল এই যে, দ্বিতীয় খলিফা ওমরের (রা.) খেলাফতের প্রথম দিকে ১৪ হেজরীর রমাদান মাসে খলিফা একদিন দেখতে পান, মসজিদে একেক জন একেক দিকে উচ্চৈস্বরে ক্বেরাত করে এই নফল সালাহ কায়েম করছেন। তিনি বিচ্ছিন্ন এই মুসল্লীগণের মধ্যে শৃঙ্খলা বিধানের উদ্দেশ্যে তাদেরকে একজন ইমামের অধীনে এসে সালাহ কায়েমের হুকুম দেন। (আব্দুর রহমান বিন আব্দুল ক্বারী থেকে বোখারী, এবং ইবনে সা’দ, কেতাব আল তাবাকাত, সুয়ূতি ইত্যাদি) এ ঘটনাটি থেকে এটা বলা যায় না তিনি তারাবীর প্রচলন করেছেন। তবে এর সূত্র ধরেই পরবর্তী ইমামগণ জামাতে ২০ রাকাত বাধ্যতামূলক তারাবী প্রচলন করেছেন। রসুল যেটি আশঙ্কা করেছিলেন, সেই নফল সালাহ এখন আকিদাগতভাবে বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে।
যেহেতু মহানবীর ব্যক্তিগতভাবে বেতর ও নফল মিলিয়ে এগার রাকাত সালাহ কায়েমের দলিল পাওয়া যায়, কাজেই এশার পর বেতরের আগে রমাদান উপলক্ষে নফল হিসাবে একা একা সর্বনিু ৪ রাকাত থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বে যত রাকাত খুশি নফল সালাহ কায়েম করা যেতে পারে। আরেকটি বিষয় হলো এই সালাহ প্রতিদিন ২০ রাকাত করে ফরদের মতো বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে এমন ধারণা সঠিক নয়। কারণ রসুল এই সালাহ ফরদ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রকাশ্যে কায়েম করা ত্যাগ করেছিলেন। বর্তমানে ধর্মব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে এভাবেই ইসলামের কম গুরুত্বপূর্ণ বহুকিছু মহাগুরুত্বপূর্ণ বলে স্থান করে নিয়েছে।
এই বিভ্রান্তিকর অবস্থা কীভাবে সৃষ্টি হলো
ব্রিটিশ খ্রিষ্টানরা এই জাতিকে গোলাম বানানোর পর এরা যেন আর কোনদিন মাথা তুলতে না পারে সেই ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবস্থাগুলির একটি হলো, এই জাতিকে তারা দিনমান আল্লাহর উপাসনা-বন্দেগিতে ব্যস্ত করে রাখবে। এর জন্য হাদিস, সেরাত, ফেকাহ থেকে তারা রসুলাল্লাহ ও তাঁর আসহাবদের ব্যক্তিগত আমলগুলি খুঁজে বের করল। প্রথমে তারা বের করল সালাতের তালিকা। এটা সাধারণ জ্ঞান যে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আল্লাহ যেগুলি ফরদ করেছেন। আর একটি দীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর জাতীয় ও সামষ্টিক বিষয়গুলি। তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সেই দীনকে প্রতিষ্ঠা করা। ইসলামের বেলায়ও তাই। ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর ভিত্তি তওহীদ, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব। এর পরে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই দীনকে মানুষের জাতীয় সামষ্টিক জীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম করা বা জেহাদ করা। এই বিষয়গুলি দীনের এবং উম্মাহর অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইসলাম মানুষের ব্যক্তিগত জীবনকেও নিয়ন্ত্রণ করে, তাই ব্যক্তিগত চারিত্রিক উন্নয়নের জন্য এতে ঐচ্ছিক বা নফল আমলেরও বিধান আছে। যখন মানুষ ঐ অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলি পালন করে, তখন প্রশ্ন আসে ব্যক্তিগত নফল আমলগুলি করে আত্মার ও চরিত্রের উন্নয়ন ঘটানোর। ব্রিটিশ খ্রিষ্টানরা যখন এই জাতির সার্বভৌমত্বের অধিকার নিজেদের হাতে নিয়ে নিল, তখন মুসলিমরা সেটাকে সহজভাবে নিল না, অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে জেহাদে অবতীর্ণ হলো। তাই ব্রিটিশদের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ালো মুসলিম জাতির এই জেহাদমুখী চরিত্রকে বিলুপ্ত করে দেওয়া। এই লক্ষ্যেই তারা একটি বিকৃত ইসলাম তৈরি করল যেখানে তওহীদকে ব্যক্তিগত জীবনে এক আল্লাহর উপাসনা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হলো এবং জেহাদকে আত্মার বিরুদ্ধে বলে চালিয়ে দেওয়া হলো। আর যত রকম সুন্নাহ, মোস্তাহাব, নফল নামাজ খুঁজে পাওয়া গেল যেমন- তারাবী, তাহাজ্জুদ, আওয়াবীন, এশরাক, চাশত এমন অনেক সালাহকে মহা-গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে উপরে স্থান দেওয়া হলো। এরপর ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় যেমন- হায়েজ-নেফাস, ঢিলা কুলুখ, দস্তরখান ইত্যাদি নিয়ে অগণিত মাসলা মাসায়েল তো আছেই। এতসব আমল ও সওয়াবের কাজ এই জাতির সামনে উপস্থাপন করা হলো যে এই আমলগুলি নিয়ে ব্যাপৃত থাকলে সেই জাতির পক্ষে আর সম্ভব হবে না জেহাদ করে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা। তাদেরকে শেখানো হলো- রাজনীতি, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা এগুলি সব দুনিয়াবি ব্যাপার। এগুলি ইসলামের মুখ্য কিছু নয়, গৌণ এবং অপকৃষ্ট বিষয়। সুতরাং এদিকে নজর না দিয়ে ওপারের জন্য আমল যোগাও, এটাই পরহেজগার হওয়ার সঠিক পন্থা। যখন এই জাতি রাষ্ট্রীয় এবং জাতীয় জীবনের কর্মব্যস্ততা থেকে মুক্তি (!) পেল, তখন তারাও গবেষণা করে আরও প্রচুর ব্যক্তিগত আমল বের করল এবং মানুষকে শিক্ষা দিল। আর ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ সাধারণ মানুষ সেগুলিকেই অতি সওয়াবের কাজ মনে করে রাতদিন খেটে ঐসব আমল করে যেতে লাগল এবং আজও করে যাচ্ছে। অথচ এমন বহু আমলও তারা করে যাচ্ছে যেগুলির কথা রসুলাল্লাহ (সা.) এবং তাঁর আসহাবরা কখনও শোনেনও নি, অথবা শুনলেও সেগুলির প্রতি তাঁরা কোন গুরুত্ব আরোপ করেন নি।
এই সুগভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে এই সুবিশাল জাতি একটি প্রাণহীন লাশের মত অর্ধ পৃথিবী জুড়ে পড়ে রইল। এই মরা লাশের গায়েই তারা আতর মেখে, চুল দাড়ির পরিচর্যা করে, চোখে সুরমা লাগিয়ে, দাঁত মেসওয়াক করে দিন গুজরান করে যাচ্ছে। তারা একবার দেখছেও না যে, এতো মরা লাশ। এই লাশের মধ্যে সবার আগে দরকার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা। এই প্রাণ হচ্ছে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারও হুকুম বিধান মানি না)।
আজ এই মুসলিম নামক জনসংখ্যাটি তাদের জাতীয় জীবনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকারী (ইলাহ) হিসাবে আল্লাহকে মানছে না, তারা সামষ্টিক জীবনে আল্লাহর হুকুম-বিধানগুলি বাদ দিয়েছে, বাদ দিয়ে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদি খ্রিষ্টান ‘সভ্যতার’ তৈরি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্রসহ বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্রের বিধান দিয়ে তাদের জীবন চালাচ্ছে। এদের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষানীতি এমন কি সংস্কৃতি পর্যন্ত দাজ্জাল নিয়ন্ত্রিত। দাজ্জালকে প্রভু, ইলাহ হিসাবে গ্রহণ করে তারা কার্যতঃ মোশরেক ও কাফের হয়ে আছে। কাফের-মোশরেকদের প্রথম কাজ কি হওয়া উচিত? নামাজ পড়া, রোজা রাখা-নাকি আগে ইসলামে প্রবেশ করা?
নিশ্চয়ই ইসলামে প্রবেশ করা। সুতরাং এই জাতির প্রথম কাজ ইহুদি-খ্রিষ্টান ‘সভ্যতা’র বিধান ও কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে আল্লাহকে একমাত্র বিধাতা হিসাবে মেনে নেওয়া। তা না করে নামাজ, রোজা, হজ্ব, তারাবি, এফতার নিয়ে মাতামাতি করা নেহায়েত বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাদেরকে আগে বুঝতে হবে যে, আজ দুনিয়াময় যে ইসলামটা চলছে এটা আল্লাহ-রসুলের ইসলাম নয়, এটা খ্রিষ্টান এবং মুসলিম ধর্মজীবিদের তৈরি বিকৃত বিপরীতমুখী একটি ধর্ম। এই ইসলাম না তাদেরকে দুনিয়াতে শান্তি ও শ্রেষ্ঠত্ব দেবে, না আখেরাতে তাদেরকে জান্নাত দেবে। প্রকৃত ইসলামের সময় মো’মেন মুসলিমরা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের, আল্লাহর হুকুমতের অধীন ছিলেন আর বর্তমানের মুসলিম নামধারী জাতিটি তাগুতের, দাজ্জালের সার্বভৌমত্ব তথা হুকুমতের অধীন। এই উভয় অবস্থার পার্থক্য এই জাতিকে আগে বুঝতে হবে। আর রসুল তাঁর আসহাবদের জীবনের সর্বপ্রধান কাজ ছিল আল্লাহর সত্যদীনকে সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করার জন্য জীবন ও সম্পদ উৎসর্গ করে সংগ্রাম করা। নবী ও সাহাবীদের কাছে যে বিষয়ের গুরুত্ব ছিল এক নম্বরে যেমন তওহীদ এবং জেহাদ, আজকের মুসলিম নামধারী জাতির কাছে তার কোন গুরুত্বই নেই। তাদের কাছে এক নম্বর বিষয় হলো দাড়ি আছে কিনা, টুপি আছে কিনা, জোব্বা আছে কি না, পকেটে মেসওয়াক আছে কি না। এই বিকৃত ইসলাম থেকে এ জাতিকে বেরিয়ে আসতে হবে, নয় তো এপারে যেমন সকল জাতির পায়ের তলে পিষ্ট হচ্ছে, ওপারে গিয়েও তারা পতিত হবে ভয়ঙ্কর জাহান্নামে। আজকে তারা যত আমল করে বহু সওয়াব কামাচ্ছেন বলে ধারণা করছেন, সেই সব আমল তাদের সামনে ধূলা ময়লার মতো বিক্ষিপ্ত করে দেওয়া হবে (সুরা ফোরকান ২৩)।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...