হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর সঙ্গে বাংলার ইতিহাসের যোগসূত্র

সমগ্র মানবজাতি আজ বহুমুখী সংকটে পতিত। প্রতিটি মানুষ যেমন দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত, ভীত-সন্ত্রস্ত, তেমনি বিশ্বজুড়ে চলছে যুদ্ধ, হানাহানি, রক্তপাত। প্রতিটি মানবাত্মা ত্রাহিসুরে চিৎকার করছে- শান্তি চাই শান্তি চাই। কিন্তু শান্তি কোথায়?…
শান্তির জন্য বহু ধরণের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৈরি করা হয়েছে, তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংঘ। কিন্তু সবই ব্যর্থ। এমনই দুর্যোগঘন মুহুর্তে, এই ভয়াবহ সংকটজাল থেকে মানবজাতিকে পরিত্রাণ করার জন্য অসীম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহ তাঁর এক বান্দাকে সত্যের পথনির্দেশ দান করলেন। তিনিই হচ্ছেন হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তিনি এমন এক পরিবারের সন্তান যাঁদের কীর্তির সঙ্গে আবহমান বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি এক সূত্রে গাঁথা।

এমামুযযামানের সম্মানিত পূর্বপুরুষগণ

তিনি রসুলাল্লাহর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন ইবনে আলী (রা.) এর বংশধর। সেই সূত্রে তাঁর ধমনীতে রসুলে পাক (দ.) এর পবিত্র রক্তও প্রবাহিত হচ্ছে। ১৪০০ বছর আগে যে উম্মতে মোহাম্মদী আরবভূমি থেকে সমগ্র পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলেন, এমামুযযামানের পূর্বপুরুষগণও ছিলেন তাদের অন্তর্ভুক্ত।
এমামুযযামানের সম্মানিত পূর্বপুরুষ হজরত শাহ রাজু কাতাল হোসাইনী (র.) এর পবিত্র দরগাহ শরীফ
এমামুযযামানের সম্মানিত পূর্বপুরুষ হজরত শাহ রাজু কাতাল হোসাইনী (র.) এর পবিত্র দরগাহ শরীফ

তাঁর পূর্বপুরুষগণের মধ্যে আধ্যাত্মিকতা ও শৌর্যবীর্যের অপূর্ব সমন্বয় পরিবারের একটি মহিমা ও পরম্পরারূপে বিরাজ করছে। এ বংশধারায় একদিকে যেমন জন্ম নিয়েছেন অনেক সুফি, দরবেশ, আধ্যাত্মিক পুরুষ, অপরদিকে বহু দিগি¦জয়ী যোদ্ধা ও শাসকও পৃথিবীর বুকে তাদের অক্ষয় কীর্তি রচনা করে গেছেন।
ইমাম জাফর সাদিক ইবনে মোহাম্মদ (র.), হজরত শাহ রাজু কাতাল হোসাইনী (র.), হযরত সৈয়দ মুহম্মদ হোসাইনী খাজা বন্দে নেওয়াজ গেসু দরাজ (র.) প্রমুখ সুফি সাধকগণ তাঁরই সম্মানিত পূর্ব পুরুষ যাঁদের মাজার শরীফগুলোতে আজও লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষের তীর্থক্ষেত্র।
ভারতের গুলবর্গা, কর্নাটকে অবস্থিত এমামুযযামানের সম্মানিত পূর্বপুরুষ হযরত খাজা বন্দে নেওয়াজ গেসু দরাজ (র.) এর দরগাহ শরীফ এর প্রাঙ্গন।
ভারতের গুলবর্গা, কর্নাটকে অবস্থিত এমামুযযামানের সম্মানিত পূর্বপুরুষ হযরত খাজা বন্দে নেওয়াজ গেসু দরাজ (র.) এর দরগাহ শরীফ এর প্রাঙ্গন।

সুলতানী যুগে এমামুযযামানের পূর্বপুরুষগণ ছিলেন বৃহত্তর বঙ্গের সুলতান। তাঁদের শাসনামল ইতিহাসের পাতায় কররানি যুগ বলে আখ্যায়িত। পূর্বে আফগানিস্তানের কাররান প্রদেশে তাঁদের নিবাস ছিল বলে পন্নী পরিবারের সদস্যগণ কাররানি বলেও পরিচিত হতেন। তাজ খান কররানি ১৫৬৩ সনে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি একবছর পর ইন্তেকাল করলে তাঁর ভাই সোলায়মান খান কররানি বঙ্গভূমিকে স্বাধীন হিসাবে ঘোষণা করেন, তবে তিনি দিল্লির সম্রাট আকবরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখেন। তিনি ত্রিপুরা থেকে ভারতের উত্তর প্রদেশ, দক্ষিণে পুরী পর্যন্ত বিরাট ভূখণ্ডের শাসক ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর পূত্র দাউদ খান কররানি সুলতান হন এবং দিল্লির সিংহাসন অধিকার করার অভিপ্রায়ে বাদশাহ আকবরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

এমামুযযামানের পূর্বপুরুষ দাউদ খান পন্নী ও মোঘল বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত ঐতিহাসিক রাজমহলের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমেই বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয় এবং দিল্লির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। (তারিখ ই বাদাউনি)
এমামুযযামানের পূর্বপুরুষ দাউদ খান পন্নী ও মোঘল বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত ঐতিহাসিক রাজমহলের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমেই বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয় এবং দিল্লির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। (তারিখ ই বাদাউনি)

পরিণামে ১৫৭৬ সনে রাজমহলের যুদ্ধে তিনি আকবরের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেন। তিনিই ছিলেন স্বাধীন বাংলার শেষ সুলতান। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার নামটি আজও তার স্মৃতি বহন করছে। তার পরই বঙ্গভূমি দিল্লির অধীনে চলে যায়। সোনারগাঁওয়ের ঈসা খাঁ লোহানী, ওসমান খাঁ লোহানী, যশোরের মহারাজা প্রতাপাদিত্য, চাঁদ রায়, কেদার রায় প্রমুখ জমিদারগণ যারা বারো ভুইয়া নামে খ্যাত, তারা ছিলেন কররানি সুলতানদেরই সেনানায়ক বা রাজকর্মচারী। তারা মোঘল দখলদারির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যান। ঢাকার কেরানিগঞ্জের নামকরণ এই কররানি থেকেই হয়েছিল।

সইদ খান পন্নী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আতিয়া মসজিদ (সন ১৬০৮)
সইদ খান পন্নী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আতিয়া মসজিদ (সন ১৬০৮)
এরপরও পন্নী বংশীয়রা মোঘল সুবা বাংলার শাসক ছিলেন। সুলতান বায়াজীদ খান পন্নীর পুত্র সাইদ খান পন্নী ছিলেন ময়মনসিংহ, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শাসক। তিনিই ঐতিহাসিক আতিয়া মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর দৌহিত্র সলিম খান পন্নী ছিলেন চট্টগ্রাম এলাকার সুবেদার। তিনি প্রবাদপ্রতীম শিকারী ছিলেন। তাঁর শিকারপ্রীতি সম্পর্কে “সলিম পন্নী বাঘমার-চাটগাঁও কি সুবেদার” – এমন জনশ্রুতি প্রচলিত ছিল।
পরবর্তী সময়ে সমগ্র ভারতবর্ষই ব্রিটিশ শাসনের পদানত হয়। তখনও উক্ত এলাকায় এ ক্ষয়িষ্ণু রাজপরিবারের জমিদারি বজায় থাকে। প্রজাহিতৈষীতা ও ধর্মপরায়ণতার জন্য তারা ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়।
মাননীয় এমামুযযামানের প্রপিতামহ হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নী দৃষ্টিহীন হয়েও ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। তিনিই ঐতিহাসিক মাহমুদিয়া প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা যা ছিল উনিশ শতকে মুসলিম সাহিত্য আন্দোলন ও সাংবাদিকতা জগতের সূতিকাগার। তাঁরই উদ্যোগে ও পৃষ্ঠপোষণে ১৮৮৪ সনে ঐতিহাসিক ‘আখবারে ইসলামিয়া’- পত্রিকাটি। ১৮৩৬ সনে মাওলানা মুহাম্মদ নঈমুদ্দিন এর করা পবিত্র কোর’আনের টীকাসহ প্রথম বঙ্গানুবাদটি হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নীর পৃষ্ঠপোষণে ১৮৮৭ সনে করটিয়ার মাহমুদিয়া প্রেস থেকেই প্রকাশিত হয়েছিল। প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তির নিদর্শন করটিয়া মসজিদটি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন।
তুরস্কের রাজকন্যার সঙ্গে মাননীয় এমামুযযামানের প্রপিতামহ হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নীর নিকাহনামার একটি পৃষ্ঠা
তুরস্কের রাজকন্যার সঙ্গে মাননীয় এমামুযযামানের পূর্বপুরুষ হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নীর নিকাহনামার একটি পৃষ্ঠা

হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নীর স্ত্রী ছিলেন তুরস্কের অটোমান রাজকন্যা। তাদের কন্যা রওশন আখতারের পাণিগ্রহণ করেন ঢাকার নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ। খাজা সলিমুল্লাহ ছিলেন নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব।

নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ
নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ

তার মতো দানবীর ইতিহাসে খুব একটা দেখা যায় না। বুড়িগঙ্গার পাড় থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো এলাকা নিয়ে একটা মৌজা ছিল যার মালিক ছিলেন তিনি। এই পুরো সম্পত্তি যা তার নামে সলিমাবাদ মৌজা নামে আখ্যায়িত হতো তা তিনি বিলিয়ে দিয়েছিলেন জাতির কল্যাণে। তার সম্পত্তির উপর গড়ে উঠলো ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়। নাম রাখা হলো পিতা খাজা নবাব আহসান উল্লাহর নামে আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল যা বর্তমানে বুয়েটে রূপান্তরিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রমনা এলাকায় তার সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র হল ‘সলিমুল্লাহ হল” এবং “স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল” এখনো তার স্মৃতি বহন করছে।

শাহবাগে ছিল হরিণ বিচরণ কেন্দ্র। এই এলাকাটিই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য দান করেছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ।
শাহবাগে ছিল হরিণ বিচরণ কেন্দ্র। এই এলাকাটিই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য দান করেছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অপর যে মহান ব্যক্তিত্বের বিরাট অবদান রয়েছে তিনি মাননীয় এমামুযযামানের মায়ের নানা ধনবাড়ির জমিদার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। তিনি অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে অর্থাভাব দেখা গেলে নিজ জমিদারীর একাংশ বন্ধক রেখে এককালীন ৩৫,০০০ টাকা প্রদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন”-টি তাঁরই কীর্তির স্বাক্ষর।

ধনবাড়ির জমিদার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাত ও তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী সিনেট হল তারই স্মৃতি বহন করছে।
ধনবাড়ির জমিদার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাত ও তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী সিনেট হল তারই স্মৃতি বহন করছে।

এমামুযযামানের দাদা প্রখ্যাত সুফি সাধক মোহাম্মদ হায়দার আলী খান পন্নী ব্রিটিশ শাসকদের প্রদত্ত খেতাব "Companions of the Order of the Indian Empire" (CIE) প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এমামুযযামানের দাদা প্রখ্যাত সুফি সাধক মোহাম্মদ হায়দার আলী খান পন্নী ব্রিটিশ শাসকদের প্রদত্ত খেতাব “Companions of the Order of the Indian Empire” (CIE) প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত করতে পন্নী জমিদারগণ ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। এমামুযযামানের দাদা প্রখ্যাত সুফি সাধক মোহাম্মদ হায়দার আলী খান পন্নীর ভাই আটিয়ার চাঁদ খ্যাত দানবীর ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ওরফে চান মিয়া তার জমিদারি ওয়াকফ করে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অর্থ যুগিয়েছিলেন।

ধনবাড়ি নওয়াব ইনন্সিটিউশন প্রতিষ্ঠা কাল ১৯১০ সাল। এই ইনন্সিটিউশনটি নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ধনবাড়ি নওয়াব ইনন্সিটিউশন প্রতিষ্ঠা কাল ১৯১০ সাল। এই ইনন্সিটিউশনটি নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এ পরিবারের সন্তান মাননীয় এমামুযযামানও ছিলেন আধ্যাত্মিক ও মানবিক চরিত্রে বলিয়ান এমন এক মহান পুরুষ যাঁর ঘটনাবহুল ৮৬ বছরের জীবনে একটি মিথ্যা বলার বা অপরাধ সংঘটনের দৃষ্টান্ত নেই। তাঁর পিতৃনিবাস টাঙ্গাইল করটিয়া জমিদার বাড়ির দাউদমহল। পিতা মোহাম্মদ মেহেদী আলী খান পন্নী। মাননীয় এমামুযযামান ১৯২৫ সালের ১১ মার্চ, পবিত্র শবে বরাতে জন্মগ্রহণ করেন।

এমামুযযামান তখন স্কুলে পড়েন
এমামুযযামান তখন স্কুলে পড়েন

তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রোকেয়া উচ্চ মাদ্রাসায়, দু’বছর তিনি সেখানে পড়াশুনা করেন। তারপর এইচ. এম. ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯৪২ সনে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। এরপর বাংলার আলিগড় নামে খ্যাত সা’দাত কলেজে কিছুদিন পড়াশুনা করেন। এ সবগুলো প্রতিষ্ঠানেরই প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ব্রিটিশ বাংলা নবজাগরণের অগ্রদূৎ মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী খান পন্নী, যিনি আটিয়ার চাঁদ নামে সমধিক খ্যাত। তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানের জন্য তাঁকে জেল খাটতে হয়েছিল।

এমামুযযামানের শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত বগুড়ার নওয়াব প্যালেস যা বর্তমানে জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে।
এমামুযযামানের শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত বগুড়ার নওয়াব প্যালেস যা বর্তমানে জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে।

এরপর মাননীয় এমামুযযামান ভর্তি হন বগুড়ার আজিজুল হক কলেজে। নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর পৌত্র নওয়াবজাদা মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ছিলেন এমামুযযামানের খালু, যিনি পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এমামুযযামান তাঁর এই খালুর বাড়ি বগুড়ার নওয়াব প্যালেসে থেকে প্রথম বর্ষের পাঠ সমাপ্ত করেন। দ্বিতীয় বর্ষে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করেন।

করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (চান মিয়া) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সাদত কলেজ যা শিক্ষাক্ষেত্রে ব্রিটিশ বৈষম্যনীতির শিকার মুসলিমদের অগ্রণী করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কলেজ। এর অধ্যক্ষ ছিলেন প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ।
করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (চান মিয়া) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সাদত কলেজ যা শিক্ষাক্ষেত্রে ব্রিটিশ বৈষম্যনীতির শিকার মুসলিমদের অগ্রণী করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কলেজ। এর অধ্যক্ষ ছিলেন প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে এমামুযযামান

কলকাতায় শিক্ষালাভের সময় ভারত উপমহাদেশ ছিলো ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে উত্তাল। তরুণ এমামুযযামানওএ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই সুবাদে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের বহু কিংবদন্তী নেতার সাহচর্য লাভ করেন। যাঁদের মধ্যে মহাত্মা গান্ধী, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্, অরবিন্দু ঘোস, শহীদ হোসেন সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী অন্যতম।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তেহরিক-এ-খাকসার-এর বিপ্লবীদের সেল্যুট গ্রহণ করছেন এমামুযযামান
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তেহরিক-এ-খাকসার-এর বিপ্লবীদের সেল্যুট গ্রহণ করছেন এমামুযযামান

এমামুযযামান যোগ দিয়েছিলেন আল্লামা এনায়েত উল্লাহ খান আল মাশরেকী প্রতিষ্ঠিত ‘খাকসার’ আন্দোলনে। ছাত্র বয়সে একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগদান করেও তিনি দ্রুত জ্যেষ্ঠ নেতাদের ছাড়িয়ে পূর্ববাংলার কমান্ডারের পদ লাভ করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে দুঃসাহসী কর্মকাণ্ড ও সহজাত নেতৃত্বের গুণে Special Assignment -এর জন্য ‘সালার-এ-খাস হিন্দ’ মনোনীত হন।

দেশবিভাগের পর

দেশবিভাগের অল্পদিন পর তিনি গ্রামে প্রত্যাবর্তন করেন এবং দাদার অনুপ্রেরণায় হোমিও মেডিসিন নিয়ে পড়শুনা করে মানুষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান শুরু করেন। তিনি দরিদ্র রোগীদের থেকে কখনোই ফি নিতেন না, অসংখ্য রোগীকে তিনি নিয়মিতভাবে ফি ছাড়াই চিকিৎসা করেছেন। টাঙ্গাইলে বসন্ত রোগের মহামারীর সময় অধিকাংশ মানুষ যখন ভয়ে রোগীদের কাছে যেত না, তিনি তাদের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করেছেন, হাজার হাজার মানুষকে প্রতিষেধক ইনজেকশান দিয়েছেন।
পাখি শিকারের সঙ্গীদের সঙ্গে সাদা টি-শার্ট পরিহিত এমামুযযামান
পাখি শিকারের সঙ্গীদের সঙ্গে সাদা টি-শার্ট পরিহিত এমামুযযামান

পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসারে এমামুযযামানও শৈশব থেকেই একজন শিকারি ছিলেন। সুযোগ পেলেই রায়ফেল হাতে চলে যেতেন দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে। তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে মির্জাপুরের গোড়াই নদীতে কুমির শিকার করেন। শিকারের লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে তিনি ‘বাঘ-বন-বন্দুক’ নামক একটি বই লেখেন।

12183946_10206047179593245_5694102580135360823_o

বইটি পাকিস্তান লেখক সংঘের সম্পাদক শহীদ মুনির চৌধুরী মন্তব্য করেছিলেন: বাঘ-বন-বন্দুক এক উপেক্ষিত এবং অনাস্বাদিত জগতের যাবতীয় রোমাঞ্চ ও উৎকন্ঠাকে এমন সরসরূপে উপস্থিত করেছে যে পঞ্চমুখে আমি তার তারিফ করতে কুণ্ঠিত নই।…আমি বিশেষ করে মনে করি এই বই আমাদের দশম কি দ্বাদশ শ্রেণীর দ্রুতপাঠের গ্রন্থরূপে গৃহিত হওয়া উচিত।

বাঘ-বন-বন্দুক বইয়ের প্রচ্ছদ। প্রকাশকাল ১৯৬৪।
বাঘ-বন-বন্দুক বইয়ের প্রচ্ছদ। প্রকাশকাল ১৯৬৪।

মাননীয় এমামুযযামান ছিলেন একজন দক্ষ ফুটবলার, মোটর সাইকেল স্টান্ট ও রায়ফেল শুটার। ১৯৫৬ সনে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের জন্য পাকিস্তান দলের অন্যতম রায়ফেল শুটার হিসাবে নির্বাচিত হন।

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও ছিল পন্নী পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার সম্বন্ধ।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও ছিল পন্নী পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার সম্বন্ধ।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও ছিল পন্নী পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার সম্বন্ধ। বাংলাদেশের প্রথিতযশা কবি, লেখিকা ও নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম সুফিয়া কামাল ছিলেন এমামুযযামানের দাদীর ভাইয়ের স্ত্রী অর্থাৎ সম্পর্কে এমামুযযামানের দাদী। ১৯৫৭ সনে প্রকাশিত বেগম সুফিয়া কামালের কাব্যগ্রন্থ “মন ও জীবন” এর প্রকাশক ছিলেন এমামুযযামান নিজেই।

রাজনীতিক জীবন

ওয়াজেদ আলী খান পন্নী সাহেবের দৌহিত্র অর্থাৎ মাননীয় এমামুযযামানের চাচাতো ভাই খুররম খান পন্নী পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের চীপ হুইপ এবং একজন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। আরেক চাচাতো ভাই হুমায়ন খান পন্নী পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ও পরবর্তীতে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। খুররম খান পন্নীর পুত্র দ্বিতীয় ওয়াজেদ আলী খান পন্নী বাংলাদেশ সরকারের উপমন্ত্রী ছিলেন। এমামুযযামানের মায়ের মামা সৈয়দ হাসান আলী চৌধুরী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের শিল্পমন্ত্রী। এভাবে পরিবারের অনেকেই ছিলেন সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মাননীয় এমামুযযামানের খালু পাকিস্তানের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী
মাননীয় এমামুযযামানের খালু পাকিস্তানের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী

সমসাময়িক রাজনীতিকদের পীড়াপিড়িতে এক যুগ পরে এমামুযযামান আবার রাজনীতির অঙ্গনে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সনে টাঙ্গাইল-বাসাইল নির্বাচনী আসনে স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা অনেকেই চেয়েছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ মওলানা ভাসানীকে দিয়ে ক্যাম্পেইন করাতে, কিন্তু মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, ‘সেলিমের বিপক্ষে আমি ভোট চাইতে পারব না, চাইলেও লাভ হবে না। কারণ তাঁর বিপক্ষে তোমরা কেউ জিততে পারবে না।’ বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। বিপক্ষীয় মোট ছয়জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত করে তিনি প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য (এম.পি.) নির্বাচিত হন।

স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকল্পে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এ, টী এম মোস্তাফাকে (মধ্যখানে) নিজ এলাকায় আসেন এমামুযযামান (মালা হাতে)।
স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকল্পে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এ, টী এম মোস্তাফাকে (মধ্যখানে) নিজ এলাকায় আসেন এমামুযযামান (মালা হাতে)।
অসামান্য ব্যক্তিত্ব, সততা, নিষ্ঠা, ওয়াদারক্ষা, নিঃস্বার্থ জনসেবা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের কারণে আইন পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হয়েও তিনি প্রবীণ রাজনীতিকদের শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। ১৯৬৩ সনে তিনি করটিয়ায় হায়দার আলী রেড ক্রস ম্যাটার্নিটি অ্যান্ড চাইল্ড ওয়েলফেয়ার হসপিটাল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৬৪ সালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মুসলিম-হিন্দু, বাঙালি ও বিহারিদের মধ্যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এতে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটছিল এবং অবাধে চলছিল লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ। রাজনীতিক স্বার্থহাসিলের জন্য আইয়ুব সরকার এ দাঙ্গাকে উৎসাহিত করে। এমামুযযামান এমপি হয়েও সরকারের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে দাঙ্গা কবলিত এলাকাগুলোয় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তাঁর ছিল দৃপ্ত পদচারণা। তিনি উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীত ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ হোসেন খসরুর কাছে রাগসঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন। জাতীয় কবি নজরুলও ছিলেন একই গুরুর শিষ্য। নজরুলের কীর্তি সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত নজরুল অ্যাকাডেমির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন মাননীয় এমামুযযামান।
কবি সুফিয়া কামাল ও কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা সাহিত্যের এই দুই দিকপালের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন এমামুযযামান
কবি সুফিয়া কামাল ও কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা সাহিত্যের এই দুই দিকপালের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন এমামুযযামান

মাননীয় এমামুযযামান হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে উপমহাদেশের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান, তৎকালীন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ অনেক বরেণ্য ব্যক্তি তাঁর রোগীদের অন্তর্ভুক্ত।

সত্যের সন্ধান ও প্রকাশ

ছোটবেলায় যখন মাননীয় এমামুযযামান মোসলেম জাতির পূর্ব ইতিহাসগুলি পাঠ করেন তখন থেকেই তাঁর মনে কিছু প্রশ্ন নাড়া দিতে শুরু করে। তখন প্রায় সমগ্র মোসলেম বিশ্ব ইউরোপীয় জাতিগুলির দাসত্ব সীকার করে জীবনযাপন কোরছিল। তিনি ভাবতে লাগলেন এ জাতির অধঃপতনের কারণ কী? ষাটের দশকে এসে তাঁর সামনে এ বিষয়টি দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে গেল। তিনি বুঝতে পারলেন কোন পরশপাথরের ছোঁয়ায় অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত আরবরা মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে অর্ধবিশ্বজয়ী জাতিতে পরিণত হয়েছিল। সেই পরশপাথর হচ্ছে প্রকৃত ইসলাম যা আজ পৃথিবীতে নেই। বর্তমানে ইসলাম হিসাবে যেটা চালু আছে সেটা রসুলাল্লাহর আনীত ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত। এমনকি দীনের ভিত্তি তওহীদ পর্যন্ত হারিয়ে গেছে।
‘এ ইসলাম ইসলামই নয়’ বইটি লিখতে এমামুযযামানের দীর্ঘ সতের বছর সময় লেগে যায়।
‘এ ইসলাম ইসলামই নয়’ বইটি লিখতে এমামুযযামানের দীর্ঘ সতের বছর সময় লেগে যায়।

এ মহাসত্য মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য সত্তরের দশকে তিনি ‘এ ইসলাম ইসলামই নয়’ নামে একটি বই লিখতে শুরু করেন। দীর্ঘ সতের বছর সময় লেগে যায় বইটি সমাপ্ত করতে। বইটি প্রকাশের পর তিনি বাংলাদেশের অধিকাংশ স্কুলে কলেজে মাদ্রাসায় ডাকযোগে প্রেরণ করেন। ইসলামের প্রকৃত রূপটি ব্যাপকভাবে প্রচারের লক্ষ্যে ১৯৯৫ সনে হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের সূচনা করেন। যেদিন তিনি আন্দোলনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন সেদিনই আল্লাহ তাঁকে রসুলাল্লাহর একটি প্রসিদ্ধ হাদীস থেকে পৃথিবীতে সত্যভিত্তিক জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠারসঠিক কর্মসূচির জ্ঞান দান করেন। হেযবুত তওহীদ সেই কর্মসূচি মোতাবেক মানুষকে প্রকৃত ইসলামের দিকে আহ্বান করতে আরম্ভ করে।

করটিয়া দাউদমহলে অনুষ্ঠিত সুধী-সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মাননীয় এমামুযযামান। (১৯৯৩ সনের ২৩ সেপ্টেম্বর)
করটিয়া দাউদমহলে অনুষ্ঠিত সুধী-সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মাননীয় এমামুযযামান। (১৯৯৩ সনের ২৩ সেপ্টেম্বর)
আমরা পথভ্রষ্ট ছিলাম, গোমরাহ ছিলাম, যে মহামানবের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়াহ দান করলেন, সেই মহামানব, এ যামানার এমাম দ্য লিডার অফ দ্য টাইম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ২০১২ সনের ১৬ জানুয়ারী প্রত্যক্ষ দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেলেন।

ধারা বহমান

নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর নামাঙ্কিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে মাননীয় এমামুযযামানের রেখে যাওয়া আদর্শকে তুলে ধরে বিশ্বব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ।
নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর নামাঙ্কিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে মাননীয় এমামুযযামানের রেখে যাওয়া আদর্শকে তুলে ধরে বিশ্বব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ।

সমগ্র পৃথিবীতে মানবজাতি আজ যে মহা সংকটে পতিত তা থেকে পরিত্রাণের উপায় আল্লাহ মাননীয় এমামুযযামানকে দান করেছেন। সেটা মানবজাতির সামনে উপস্থাপন করাই হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের প্রধান দায়িত্ব, আল্লাহ প্রদত্ত আমানত।

জাতীয় জাদুঘর বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে হেযবুত তওহীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে আসেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুইজন মাননীয় মন্ত্রী।
জাতীয় জাদুঘর বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে হেযবুত তওহীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে আসেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুইজন মাননীয় মন্ত্রী।

যতদিন পর্যন্ত পৃথিবী থেকে যাবতীয় অন্যায়, অশান্তি, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর না হবে, যতদিন সমগ্র পৃথিবীর আদম সন্তানেরা আবার এক পরিবারের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ হবে ততদিন আমাদের এ সংগ্রাম চলবে এনশা’আল্লাহ।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...