হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

এখন দাজ্জাল নিরংকুশ ক্ষমতার অধিকারী

মাননীয় এমামুযযামানের লেখা থেকে সম্পাদিত:

চৌদ্দশ’ বছর থেকে মোসলেম উম্মাহর ঘরে ঘরে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা চোলে আসছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবৎ বহু ইসলামী চিন্তাবিদ, জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্ব এবং ধর্মের ধ্বজাধারী তথাকথিত আলেম মাওলানারা দাজ্জালকে নিয়ে অনেক বই লিখেছেন, গবেষণা করেছেন। দুর্ভাগ্যবশতঃ তারা রসুলাল্লাহর দাজ্জাল সম্পর্কিত রূপক বর্ণনাগুলোকেই বাস্তব হিসেবে ধরে নিয়ে এক মহা শক্তিশালী দানবের আশায় বসে আছেন। তাদের এই বিকৃত আকীদার ফলশ্র“তিতে তারা ইতোমধ্যেই পৃথিবীতে আসা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব অস্বীকারকারী এবং নিজেকে রব দাবিদার দাজ্জালকে চিনতে পারছেন না। তারা বুঝতে পারছেন না যে তাদের অজান্তেই মানবজাতির মহাবিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে আজ থেকে ৪৭৬ বছর আগেই দাজ্জালের জন্ম হোয়েছে এবং বর্তমানে সে তার শৈশব-কৈশোর পার হোয়ে যৌবনে উপনীত। হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা, এ যামানার এমাম, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী কোর’আন-হাদিস-বাইবেল, ইতিহাস এবং আধুনিক বিজ্ঞনের আলোকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ কোরেছেন যে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতাই হোল রসুলাল্লাহ বর্ণিত দানব দাজ্জাল। দাজ্জাল সম্পর্কে লেখা যামানার এমামের “দাজ্জাল? ইহুদি-খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’!” বইটি পাঠক মহলে ব্যাপক আলোচিত এবং আলোড়িত বিষয়, যা ছিলো ২০০৮ সালের বাংলাদেশের বেস্ট সেলার বই। পাঠকদের ব্যাপক চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে আমরা বইটির গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি পত্রিকায় প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এই লেখাটিও উক্ত বই থেকেই সম্পাদিত।]
আল্লাহর রসুল বোলেছেন দাজ্জালের শক্তি, প্রভাব ও প্রতিপত্তি পৃথিবীর সমস্ত মাটি ও পানি (ভূ-ভাগ ও সমুদ্র) আচ্ছন্ন কোরবে। সমস্ত পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশ চামড়া দিয়ে জড়ানো একটি বস্তুর মত তার করায়ত্ত হবে। [মুসনাদে আহমদ, হাকীম, দারউন নশুর]
বর্তমানের ইহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই যে দাজ্জাল এ সিদ্ধান্ত যারা অস্বীকার কোরবেন বা তাতে সন্দেহ কোরবেন তারা মেহেরবানী কোরে আমাদের বোলে দেবেন কি তাহোলে রসুলাল্লাহ তাঁর ঐ হাদিসে ‘দাজ্জাল’ দ্বারা কাকে বোঝাচ্ছেন? সমস্ত পৃথিবীর মাটি ও পানি অর্থাৎ সমস্ত পৃথিবীটাকে আজ কোন্ মহাশক্তি আচ্ছন্ন কোরে আছে? তারা একটু চিন্তা কোরলেই দেখতে পাবেন যে, ঐ শক্তি অবশ্যই পাশ্চাত্যের ঐ ইহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা। সমস্ত পৃথিবীতে আজ এর শক্তি অপ্রতিরোধ্য। কিছুদিন আগ পর্যন্তও দাজ্জালের দু’টি প্রধান ভাগের মধ্যে দ্বন্দ¦ ছিল, আজ নেই, এখন দাজ্জাল নিরংকুশ ক্ষমতার অধিকারী। পৃথিবীর পৃষ্ঠে কোন ভূ-ভাগ, মাটি নেই, কোন সমুদ্র নেই যেখানে এই মহাশক্তি যা ইচ্ছা তা কোরতে না পারে। এই হাদিসটিতে বিশ্বনবী যে উপমা দিয়েছেন তা সত্যই প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করে- কোন কিছু দিয়ে (এখানে তিনি চামড়া শব্দ ব্যবহার কোরেছেন) একটা বস্তুকে (এখানে এই পৃথিবীকে) সম্পূর্ণভাবে জড়িয়ে ফেলা, পেঁচিয়ে ফেলা। ইহুদি-খৃষ্টান সভ্যতার যান্ত্রিক শক্তি যেভাবে সমস্ত পৃথিবীটাকে পদানত কোরে রেখেছে তার নিখুঁত বর্ণনা দিয়েছেন আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নবী। পৃথিবীর ইতিহাস যতটুকু জানা যায়, তা থেকে বলা যায় যে, অতীতে কখনও পৃথিবীতে এমন একটি মহাশক্তির আবির্ভাব হয় নি যে শক্তি সমস্ত পৃথিবীকে পদানত ও নিয়ন্ত্রণ কোরতে পেরেছে। এটা সম্ভবও ছিলো না। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, যানবাহন ইত্যাদি এমন ছিলো না যে অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর যে কোন স্থানের সাথে যোগযোগ করা যায় বা অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে যাওয়া যায়। ইহুদি-খৃষ্টান সভ্যতার বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি সেটা সম্ভব কোরেছে। আর কোরেছে বোলেই মানব ইতিহাসে এই প্রথম এমন একটি মহাশক্তিধর দৈত্য-দানবের আবির্ভাব হোয়েছে যেটা সমস্ত পৃথিবীকে পদানত কোরেছে।
এক সময় রোমান সাম্রাজ্য পৃথিবীর এক উল্লেখযোগ্য অংশ শাসন কোরত, অন্য সময় পারসিক শক্তি বিরাট এলাকার অধিপতি ছিলো। তারও আগে বর্তমানের আফগানিস্তান থেকে পূর্বে বোর্ণিও পর্যন্ত বিশাল এলাকা ভারতীয় সভ্যতার অধীনে ছিলো। কিন্তু কোন একক মহাশক্তিই কখনো সমস্ত পৃথিবীতে আধিপত্য কোরতে পারে নি।
তার উম্মতও যে দাজ্জালের পদানত হবে তা এই হাদিসের অর্থের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। তা যদি না হতো তবে তিনি যেভাবে পৃথিবীতে দাজ্জালের আধিপত্য হবে সেখানে না বোলে বোলতেন- আমার উম্মত তাকে স্বীকার বা অনুসরণ কোরবে না, বা ‘আমার উম্মত’ না বোলে বোলতেন- মানবজাতির এক পঞ্চমাংশ (মোসলেম জাতি পৃথিবীর লোকসংখ্যার এক পঞ্চমাংশ) দাজ্জালকে স্বীকার কোরবে না। তা তিনি বলেন নি এবং তার অর্থ তাঁর উম্মতও দাজ্জালের অধীন হবে। প্রকৃত অবস্থাও তাই।
আল্লাহর রসুল বোলেছেন আরবে এমন কোন স্থান থাকবে না যা দাজ্জালের পদতলে না আসবে বা সেখানে তার প্রভাব ও প্রতিপত্তি না থাকবে। [বোখারী ও মোসলেম]
এই হাদিসটিতে তিনি নির্দিষ্ট কোরে আরবের কথা, তাঁর মাধ্যমে ইসলামের যে শেষ সংস্করণটি আল্লাহ যে দেশে পাঠিয়েছিলেন সেই আরব দেশের কথা বোলছেন। তিনি বোলছেন- সেই আরবও দাজ্জালের হাত থেকে রক্ষা পাবে না, তার পদতলে চোলে যাবে। আরবে যদিও আল্লাহর দেয়া আইন-কানুন ও দণ্ডবিধি মোটামুটি চালু আছে, অর্থাৎ ও ব্যাপারে দাজ্জালকে স্বীকার করে নাই, কিন্তু অন্যান্য সমস্ত ব্যাপারে আরবের শাসকরা দাজ্জালের অর্থাৎ পাশ্চাত্য শক্তির কাছে নতজানু হোয়ে তার আদেশ নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন। শুধুমাত্র আইন-কানুন ও দণ্ডবিধি ছাড়া অন্যান্য সমস্ত বিষয়ে আরব নেতারা পাশ্চাত্যের আদেশ-নির্দেশের অধীন এ কথা যারাই ওদের সম্বন্ধে খবর রাখেন তারাই স্বীকার কোরবেন। কারণও আছে। নেতারা, শাসকরা জানেন যে, মহা-শক্তিধর পাশ্চাত্য সভ্যতার বিরুদ্ধে গেলে তাদের সিংহাসন, আমীরত্ব থাকবে না। দাজ্জাল তাদের সরিয়ে দিয়ে তার পছন্দমত শাসক নিয়োগ কোরবে। কাজেই বিশ্বনবী বোলেছেন সমস্ত পৃথিবীতো বটেই, এমনকি সমস্ত আরবও দাজ্জালের পদানত হবে।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...