হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

উম্মতে মোহাম্মদী: কালের গর্ভে বিলীন যে যোদ্ধা জাতি

আমেনা আক্তার:

এই পৃথিবী থেকে অন্যায়-অবিচার, জুলুম, নির্যাতন, অনৈক্য-হানাহানি দূর কোরে সমগ্র মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ কোরে শান্তি, সুবিচার, সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করার জন্য আল্লাহ আখেরী নবীকে পাঠিয়েছেন। আখেরী নবী অক্লান্ত পরিশ্রম, অটল অধ্যবসায়, কঠোর সাধনা ও সংগ্রামের মাধ্যমে ঐ লক্ষ্য পূরণের জন্য পৃথিবীতে উম্মতে মোহাম্মদী নামের একটি জাতি গঠন কোরলেন। তিনি সেই জাতির লক্ষ্যকে নির্দিষ্ট কোরে দিয়েছিলেন দুনিয়াময় সংগ্রাম কোরে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যে আরবরা কিছু দিন আগেও হানাহানি-দাঙ্গা, মারামারি, রক্তপাতে নিমজ্জিত ছিলো, ভীরু-কাপুরুষ ছিলো, তাদেরকেই সত্যদীনের শিক্ষায় শিক্ষিত-প্রশিক্ষিত কোরে রসুলাল্লাহ এমন দুর্ধর্ষ, দুর্জয়, মৃত্যুভয়হীন যোদ্ধা জাতিতে পরিণত কোরলেন যে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তদানীন্তন পৃথিবীর দুইটি পরাশক্তিকে তারা একসঙ্গে বিধ্বস্ত কোরে ফেলে। তাদের এই পরিবর্তন কোরেছিল কিসে? সেটা হোচ্ছে প্রকৃত ইসলামের আকিদা এবং দুর্ধর্ষ চরিত্র সৃষ্টির প্রশিক্ষণ সালাহ। উম্মতে মোহাম্মদী ছিলো প্রকৃতপক্ষে একটি সামরিক বাহিনী যার নারীরাও ছিলো যোদ্ধা। তারা প্রত্যেকেই আল্লাহর দেওয়া সংজ্ঞা মোতাবেক আল্লাহর-রসুলের প্রতি ঈমান এবং জীবন-সম্পদ দিয়ে জেহাদ করার শর্ত পূরণ কোরে মো’মেন হোয়েছিলেন (সুরা হুজরাত ১৫); মো’মেন হওয়ার মানেই হোচ্ছে সৈনিক হওয়া। কিন্তু আজকের তথাকথিত মোসলেম নামক এই জাতিটি এই আকিদা থেকে লক্ষ মাইল দূরে। আজকে এদের কাছে নামাজ, রোজা করা, দাড়ি, টুপি, টাখনুর উপর কাপড় পরা, নিয়মিত মেসওয়াক করা, পায়জামা জোব্বা পরা, পাড়া-মহল্লা কাঁপিয়ে গোল হোয়ে বসে জেকের করা, খাওয়ার আগে নিমক ও পরে মিষ্টি খাওয়া, ডান কাতে শোওয়া, ডান পা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা ইত্যাদি বিষয়গুলিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল বোলে স্বীকৃত। এগুলোকেই তারা ইসলাম বোলে মনে করে। তাদের আকিদার মধ্যে সেই দুর্জয়-দুর্ধর্ষ, মৃত্যুভয়হীন সামরিক উম্মতে মোহাম্মদীর কোন অস্তিত্ব নেই। তারা আজ অন্যান্য জাতিগুলির নিকৃষ্ট গোলামে পরিণত হোয়েছে। প্রভু খ্রিস্টানদের শিক্ষাব্যবস্থার দ্বারা শিক্ষিত হোয়ে এখন তারা এও ভুলে গেছে যে, তাদের নিজেদের একটি জাতিসত্তা আছে। তারা জানেও না যে, তাদেরই পূর্বপুরুষগণ ছিলেন দিগি¦জয়ী বীর যাদের নাম শুনলে কাফের সৈন্যদের অন্তরাত্মা শুকিয়ে যেত। “ধর্মপরায়ণ কে” – এ প্রশ্নের জবাবে আজকের এই জনসংখ্যাটি যে উত্তর দেয়, ১৪শ’ বছর আগে একেবারে বিপরীত উত্তর পাওয়া যেত। আল্লাহর শেষ রসুল কেন এসেছিলেন, কেন তিনি উম্মতে মোহাম্মদী গঠন কোরেছিলেন এই প্রশ্নগুলির উত্তরেও এই জাতির লোকেরা হাজার হাজার রকম উত্তর দিয়ে থাকে। অথচ চৌদ্দশ’ বছর আগে ঐ জাতির লোকদেরকে ঐ প্রশ্নগুলি কোরলে সবাই একই উত্তর দিতেন, কোন মতভেদ ছিলো না। 

আল্লাহর রহমে এখন আবারো এই জাতিকে সুদৃঢ় ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হোয়েছে। মহান আল্লাহ অতীব দয়া কোরে যামানার এমাম, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে প্রায় তেরশ’ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া প্রকৃত ইসলামের জ্ঞান দান কোরেছেন। তিনি আটলান্টিকের তীর থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত অর্ধ-পৃথিবীজুড়ে পড়ে থাকা মৃত লাশের ন্যায় এই জনসংখ্যাকে ডাক দিয়ে বোলেছেন- “তোমরা ঐক্যবদ্ধ হও। মহাপ্রতারক দাজ্জালের প্রভূত্ব স্বীকার কোরে নিয়ে সারা দুনিয়া যেমন অন্যায়-অশান্তিতে ভরপুর তোমরাও তেমন অন্যায়-অশান্তিতে নিমজ্জিত হোয়ে আছো। এই অন্যায় অশান্তি থেকে বাঁচতে হোলে তোমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুনিয়াতে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব আবারও কাঁধে তুলে নিতে হবে। তোমরা যদি গলিত সীসার প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ, পিঁপড়ার মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং প্রাকৃতিক শক্তির (মালায়েক) ন্যায় নেতার প্রতি আনুগত্যশীল হোতে পারো তবে তোমরা পরিণত হবে এমন এক বজ্রশক্তিতে যার সামনে পৃথিবীর কোন শক্তিই দাঁড়াতে পারবে না।”

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...