হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ইসলামকে বুঝতে হবে সামগ্রিকভাবে

মোহাম্মদ আসাদ আলী:
ইসলামকে পূর্ণাঙ্গভাবে এক নজরে দেখার ব্যর্থতার কারণে ইসলাম সম্পর্কে হাজার রকম ধারণা আমাদের মুসলিমদের মধ্যে বিরাজ করছে। কেউ ইসলামের নামে জঙ্গি কর্মকাণ্ড করছে আবার কেউ তার সম্পূর্ণ উল্টো অর্থাৎ বিকৃত তাসাউফ চর্চা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের চেষ্টা করছে। যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে তাদের মধ্যেও রয়েছে বহু মত ও পথের বিরোধ। কেউ ধাপ্পাবাজির রাজনীতি করে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে, কেউ চাচ্ছে সহিংস পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে। এখন কোনোভাবে যদি তাদের সামনে আল্লাহ রসুলের প্রকৃত ইসলামের পূর্ণাঙ্গ চিত্রটি অর্থাৎ ইসলামের প্রকৃত আকিদা তুলে ধরা যেত তাহলে তারা নিজেদের যার যার বিকৃত অবস্থান থেকে ফিরে প্রকৃত ইসলামের পথে ফিরে আসতে পারত।
ইসলামের পূর্ণাঙ্গ চিত্রটি এক নজরে না দেখতে পারায় আরেকটি বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে যে, ইসলামের কোন কাজটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ কোনটা কম গুরুত্বপূর্ণ, কোনটা আগে কোনটা পরে, কোন আমলের পূর্বশর্ত কী তা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। এর পরিণাম এই হয়েছে যে ইসলামের নামে একেক জন একেক দিকে ডাকছেন, সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এ জন্যই ফকিহরা, ইমামরা সকলেই একমত যে আকিদা ভুল হলে ঈমান অর্থহীন অর্থাৎ উদ্দেশ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের প্রক্রিয়া সম্বন্ধে ধারণা সঠিক না হলে ঈমান ও সমস্ত আমল নিষ্ফল। আজকে ঈমানকে ভুল খাতে প্রবাহিত করেই বিভিন্ন জাতিবিনাশী কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে এবং সবকিছুই করা হচ্ছে ইসলামের নাম দিয়ে, কোর’আনের আয়াত, হাদীস, রসুলের জীবন থেকে উল্লেখ করেই।
যেমন- পবিত্র কোর’আনে শত শত আয়াতে বলা হয়েছে জেহাদ করতে। সুতরাং জেহাদ মুসলিমদের জন্য ফরদ। কিন্তু এই জেহাদ কাকে বলে, এই জেহাদের আওতায় কী কী আসে, জেহাদ ও যুদ্ধের মধ্যে পার্থক্য কী, যুদ্ধ কখন বৈধ হবে, যুদ্ধ আর সন্ত্রাসের মধ্যে পার্থক্য কী এগুলো না জানা থাকলে কোর’আনের কিছু আয়াত বা হাদিস উল্লেখ করে সহজেই মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করে ভুল পথে কাজে লাগানো যায়। আর এভাবেই একজনকে জঙ্গিবাদী কাজে সম্পৃক্ত করে ফেলা যাচ্ছে, তাকে দিয়ে মানুষ হত্যা করানো যাচ্ছে। ঈমান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই তারা কিন্তু এই সহিংস কাজটি করছে। জেহাদ সম্পর্কে আকিদা সঠিক না হওয়ার কারণেই তার ঈমানকে ভুল খাতে প্রবাহিত করা হলো, জেহাদের মতো একটি পবিত্র আমলও সন্ত্রাসে পরিণত হলো। তারও কাজে আসল না, মানুষেরও উপকার হলো না। বরং অন্যায় আরো বৃদ্ধি পেল। আরো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। ইসলামের উপর সন্ত্রাসের কলঙ্ক লেপন করা হলো, মানুষের মধ্যে ইসলামে প্রতি অনাস্থা ও ঘৃণা বৃদ্ধি পেল।
এখন একটাই করণীয় আপামর সাধারণ জনতাকে ইসলাম সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা বা আকিদা সঠিক করে দেওয়া যেন তারা কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ভুল পথে না যায়। যেন তারা বুঝতে পারে যে, মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো কথা কাজ বা চিন্তা সবই গোনাহের কাজ। আর মানুষের তথা মানবজাতির উপকার হয় বা কল্যাণ হয় এমন কথা কাজ বা চিন্তা সবই সওয়াবের কাজ। তাই একটি কাজের আগেই তারা নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি ব্যবহার করে সঠিক পথ ও ভুল পথ নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারবে। তারা এটাও বুঝতে সক্ষম হবে যে, কোনটা ইসলামের কাজ আর কোনটা ইসলামের কাজ নয়, ইসলামের কোন কাজটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বা মুখ্য আর কোন কাজটি গৌণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...