হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

আমরা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

রাকীব আল হাসান:

প্রতিটি মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি ঠিক যেন আদর্শ একটি পরিবারের মতোই। মাথা, হাত, পা, চোখ, কান, নাক, পেট ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি ঐ পরিবারের সদস্য। এই সদস্যগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সুদৃঢ় ঐক্য বিদ্যমান। একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে অন্যসকল অঙ্গ কষ্ট পায় এবং তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসে, কেউ কোনো অভিযোগ তোলে না। এই পরিবারে যদি কখনো অনৈক্য দেখা দেয়, যদি একে অপরের ক্ষতি করার চেষ্টায় মত্ত হয়, এক হাত যদি অন্য হাতকে কেটে ফেলতে উদ্যত হয়, এক পা যদি অন্য পা ভাঙ্গার মনস্থির করে, মুখ যদি পেটকে খাদ্য দেওয়া বন্ধ করে দেয় তবে ঐ পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে অর্থাৎ শরীর হয়ে পড়বে অসুস্থ এবং এক পর্যায়ে শারীরিক মৃত্যু ঘটবে। মৃত্যুর পর হাত, পা, নাক, কান, মুখ, পেটসহ সকল অঙ্গেই পঁচন ধরবে।
একটি দেশ, একটি জাতি, একটি সমাজও মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির মতোই। একটি সমাজের প্রতিটি মানুষ যখন সকল অনৈক্য ভুলে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে তখন সেটি হয় সুস্থ, সবল ও শান্তিপূর্ণ আদর্শ সমাজ। আর যখন ঐ মানুষগুলিই একে অপরের ক্ষতি করার চিন্তা করে, নানা অজুহাতে অন্য ভাইয়ের উপর আক্রমণ করে, হত্যা করে, অন্যের সম্পদ ধ্বংস করে তখন তা অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে ফলে ঐ দেশ, ঐ সমাজ বা ঐ দেশের প্রতিটি সদস্যের গায়েই পঁচন ধরবে, কেউই এই পঁচন থেকে বাঁচতে পারবে না। আজ আমাদের সমাজে অনৈক্য আর বিভেদের দেওয়াল এমনভাবে তোলা হয়েছে যে, আমরা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি, কাজেই এখনই যদি কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হয় তবে ধ্বংস থেকে কেউই বাঁচতে পারবো না।
কিছু পরিবার মিলে একটি পাড়া, কিছু পাড়ার সমন্বয়ে গঠিত হয় একটি গ্রাম এভাবেই একটি ইউনিয়ন, থানা, জেলা, বিভাগ নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ। আমরা চাইলেই হয়তো অতি অল্প সময়ের মধ্যে সমস্ত দেশকে পরিবর্তন করতে পারবো না কিন্তু সৎ মানুষিকতা নিয়ে উদ্যোগী হলে অন্তত আমাদের পাড়া, আমাদের গ্রাম, আমাদের থানাটিকে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐক্যের ভিত্তিতে শান্তির নীড় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। আসুন আমরা উদ্যোগ নিই- আমাদের গ্রামের প্রত্যেকেই দল, মত, পথ, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদির ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ হব। কেউ কারও উপর হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, গাছ কর্তন করব না, কারোর কোনো ক্ষতি করব না, একে অপরের সহযোগিতা করব, আমাদের গ্রামে কেউ না খেয়ে থাকবে না, আমাদের গ্রাম হবে শান্তির গ্রাম। এভাবে যদি আমরা আমাদের গ্রামকে সমগ্র বাংলাদেশে একটি আদর্শ গ্রাম হিসাবে পরিচিত করতে পারি, তবে অন্য গ্রামগুলিও আমাদের অনুসরণ করবে।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...